মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ব্রেক্সিট ইস্যু

আইন ‘ভাঙতে’ চান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!

আইন ‘ভাঙতে’ চান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!

পার্লামেন্টের উদ্যোগে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে আইন প্রায় চূড়ান্ত হলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তা উপেক্ষা করতে পারেন। এদিকে ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর  উদ্যোগের পক্ষে ও বিপক্ষে নানা শক্তি কাজ করছে। ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে নতুন সংঘাতের আশঙ্কা আরও বাড়ছে।

গত সপ্তাহে সংসদের দুই কক্ষ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে যে প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল, গতকালই রানীর স্বাক্ষরের মাধ্যমে তা আইনে পরিণত হওয়ার কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজের অবস্থানে এখনো অনড় রয়েছেন।   তিনি কোনো অবস্থাতেই ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দিতে চান না। শেষ মুহ‚র্তে বোঝাপড়া না হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে তিনি সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে নারাজ। এদিকে পার্লামেন্ট মুলতবির যে আবেদন প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন তা আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট স্থগিত হওয়ার কথা।

‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ সংবাদপত্রের সূত্রানুযায়ী রবিবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা আইনি পথে ব্রিটিশ সংসদের উদ্যোগ বানচালে পরামর্শ করেছেন। তাদের পরিকল্পনার আওতায় ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদনের সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি চিঠিতে জানানো হবে, ব্রিটিশ সরকার ব্রেক্সিটের মেয়াদ বাড়াতে চায় না। তবে পার্লামেন্টকে উপেক্ষা করে বরিস জনসন নিজস্ব পথে এগোতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। তিনি ১৫ অক্টোবর আগাম নির্বাচন চাইলেও সংসদে বিরোধী পক্ষ গতকালও সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করার কথা। তারা জনসনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর উদ্যোগ পুরোপুরি সফল হওয়ার আগে তাই আগাম নির্বাচন চাইছে না বিরোধীরা।

টোরি দলের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন কমে চলেছে। পার্লামেন্টে সরকারের বিরোধিতার কারণে ২১ জন এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে জনসনের নীতির বিরোধিতা করে বরিস জনসনের ভাইয়ের পর আর একজন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন। এ অবস্থায় কোণঠাসা প্রধানমন্ত্রীকে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হবে কিনা, সে বিষয়েও জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে রবিবার পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে সময়সীমা পেছানোর উদ্যোগ নিলেও ইইউ সে আবেদন মঞ্জুর করবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। জার্মানির ‘ডেয়ার স্পিগেল’ পত্রিকার সূত্রানুযায়ী, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নীতিগতভাবে ব্রেক্সিটের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে। তবে আগের মতোই যুক্তরাজ্যকে সেই আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করতে হবে। তবে ফ্রান্সের মতো কিছু দেশ বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। বলা বাহুল্য, সে ক্ষেত্রে বরিস জনসনেরই সুবিধা হবে। ‘দি ইনডিপেনডেন্ট’ সংবাদপত্রের সূত্রানুযায়ী, তিনি প্রয়োজনে ইউরোপীয় কমিশনে ব্রিটেনের আবেদন না পাঠিয়ে এমন অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারেন, যার ফলে ইইউ ৩১ অক্টোবরের পর ব্রিটেনকে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়। গতকাল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকারের সঙ্গে আলোচনা করার কথা। আইরিশ সীমান্তে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার বিকল্প নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা। বিবিসি, ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর