মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তেলের দাম অকল্পনীয় বাড়ানোর হুমকি সৌদি যুবরাজের

সামরিক হস্তক্ষেপের বদলে রাজনৈতিক সমাধান শ্রেয়

তেলের দাম অকল্পনীয় বাড়ানোর হুমকি সৌদি যুবরাজের

ইরানকে নিরস্ত করতে বিশ্ব এক না হলে তেলের দাম অকল্পনীয়ভাবে বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রবিবার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তিনি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের বদলে রাজনৈতিক সমাধান শ্রেয় বলে জানান। যুক্তরাষ্ট্রের টিভি চ্যানেল সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিট’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার দায় স্বীকার করলে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সৌদি যুবরাজ। ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে বিয়েসংক্রান্ত কাগজ আনতে খুন হন। ওই ঘটনার পিছনে যুবরাজ সালমান সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ ওঠে।

সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বলেন, ‘বিশ্ব যদি ইরানকে নিবৃত্ত করতে দৃঢ় ও কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, আমরা আরও উত্তেজনা দেখতে পাব, যা বিশ্বকেই হুমকিতে ফেলবে। তেল সরবরাহ বিঘিœত হবে এবং তেলের দাম জীবদ্দশায় দেখিনি এমন অকল্পনীয় আকাশচুম্বী অবস্থানে পৌঁছাবে,’ বলেছেন সৌদি যুবরাজ। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার নেওয়া এ সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বলেছেন, তিনি চলতি মাসের ১৪ তারিখে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি শোধনাগারসহ দুটি তেল প্লান্টে হামলায় ইরানের দায় নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর অবস্থানের সঙ্গে একমত। সৌদি আরবের তেল শিল্পক্ষেত্রের প্রাণকেন্দ্রে ওই হামলায় বিশ্বের তেল সরবরাহের পরিমাণ পাঁচ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পায়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ও সৌদি আরব এ হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করলেও তেহরান তা অস্বীকার করে আসছে। অন্যদিকে ইয়েমেনের ইরানঘনিষ্ঠ হুতি বিদ্রোহীরা হামলাটির দায় স্বীকার করেছে। সালমান বলেন, ‘রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের চেয়ে অনেক ভালো।’ যুবরাজ আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করা। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তি করে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে জোর দেন তিনি। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দুজনকে একত্রে আনার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর বেরিয়ে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে তেহরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

জামাল খাসোগি প্রসঙ্গ : সাক্ষাৎকারে গত বছর তুরস্কে সৌদি দূতাবাসে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকান্ডে র বিষয়েও কথাবার্তা হয়। এ ব্যাপারে তিনি আরও দায়িত্ব নেবেন বলে জানান মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেন, ‘সৌদি একজন নেতা হিসেবে আমি এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি, বিশেষ করে সৌদি সরকারের হয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের দ্বারা যেহেতু এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।’ সৌদি রাজতন্ত্রের কঠোর সমালোচনার জন্য তিনি নিজে সরাসরি এই হত্যাকান্ডে র আদেশ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে। তবে সেই অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করেছেন তিনি। এই বিষয়ে আদৌ তার কোনো তথ্য জানা ছিল কিনা সেই অভিযোগও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। ওই হত্যাকান্ডে র জন্য ‘নীতিবিচ্যুত’ ১১ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর