বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারতে অনুপ্রবেশকারীর কোনো জায়গা নেই

পশ্চিমবঙ্গে অমিত শাহ

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতে অনুপ্রবেশকারীর কোনো জায়গা নেই

গোটা ভারতে একজন অনুপ্রবেশকারীকেও থাকতে দেওয়া হবে না। অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিতাড়িত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

গতকাল কলকাতার নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) সম্পর্কিত একটি সভায় উপস্থিত থেকে অমিত শাহ এসব কথা বলেন। লোকসভা ভোটের পর এটাই তার প্রথম পশ্চিমবঙ্গ সফর। আর সেই সফরে এসেই এনআরসি ও নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করেন শাহ। তবে এনআরসির আগে বাংলাতে নাগরিকত্ব বিল বাস্তবায়িত করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন ‘এনআরসি নিয়ে গোটা বাংলাতে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। মমতা দিদি বলছেন এনআরসি হলেই লাখ লাখ হিন্দু শরণার্থীকে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু এর থেকে আর বড় মিথ্যা হতে পারে না। আমি বাংলার মানুষকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, অন্য রাষ্ট্র থেকে ভারতে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন শরণার্থী ভাইদের ভারত সরকার এ দেশ থেকে কোথাও বিতাড়িত করবে না।’  অমিত শাহ এ দিন জানান, ‘কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসির প্রথমে নাগরিক (সংশোধনী) বিল আনতে চায়। এর অর্থ হলো দেশের মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মমতা দিদির সরকার যতই বিরোধ করুক না কেন, মোদি সরকার এই বিল পাস করাবে।’ শাহ আরও বলেন, ‘মমতা দিদি বলছেন আমরা এনআরসি হতে দেব না। কিন্তু আমরা বলছি যে গোটা ভারতে একজন অনুপ্রবেশকারীকেও আমরা থাকতে দেব না। প্রত্যেককে চিহ্নিতকরণ করে বিতাড়িত করা হবে।’ এ প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই মমতাই যখন রাজ্যে ক্ষমতায় ছিলেন না, সে সময় এই অনুপ্রবেশকারীরা বামদের ভোট দিত। ২০০৫ সালের আগস্টে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের দাবিতে সংসদে স্পিকারের মুখের ওপর নথি ছুড়ে মেরেছিলেন। সংসদ চালাতে দেননি। আর এখন যখন এই অনুপ্রবেশকারীরাই তাদের ভোটব্যাংকে পরিণত হয়ে গেল তখন উনি বলছেন এদের তাড়াতে দেওয়া যাবে না।’ অমিত শাহ বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতেই এনআরসি অত্যন্ত জরুরি। এই প্রক্রিয়া চালু না করা গেলে ভবিষ্যতে দেশকে বড় ক্ষতির মাসুল গুনতে হতে পারে।’ তার অভিমত, ‘রাজনীতির স্বার্থ দেশের স্বার্থের থেকে বড় হতে পারে না, রাজনীতির স্বার্থ বাংলার থেকে বড় হতে পারে না।

 আমরাও রাজনৈতিক দল চালাই কিন্তু দেশের স্বার্থের বিষয় যখন আসে তখন বিজেপির স্বার্থ দেখি না।’ এ দিনের সভা থেকে বাংলার বিজেপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তার বার্তা ‘আপনারা প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে শরণার্থীদের আশ্বস্ত করুন, তারা যেন দেশ ছাড়ার আতঙ্কে না ভোগেন। তাদের সবাইকে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’ জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা প্রত্যাহার নিয়েও তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও অমিত শাহের আগেই এ দিন রাজ্যটির সচিবালয় নবান্নে একটি সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এনআরসি নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে অযথা আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। এনআরসি এ রাজ্যে চালু করার ব্যাপারে তার কাছে কোনো খবর নেই বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। 

সর্বশেষ খবর