শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেষ সময়ে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে ব্রেক্সিট চুক্তি

শেষ সময়ে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে ব্রেক্সিট চুক্তি

বরিস জনসন (বাঁয়ে) ও লিও ভারাদকর

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিটের সময় আছে আর সাকল্যে সপ্তাহ তিনেক। সময় যত পেরিয়ে যাচ্ছে একটা সুন্দর বিদায় নিয়ে সবার মাঝে উচ্ছ্বাসা কমছে। তবে এই সময়ের মধ্যেও সুন্দর সমাধানে বিশ্বাসী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বিশেষ করে গত পরশু আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকরার সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি পুরোই আত্মবিশ্বাসী। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীও চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট কার্যকর করার সম্ভাবনার উল্লেখ করলেন। ভারাদকরার মতে, ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বোঝাপড়া চূড়ান্ত করতে বদ্ধপরিকর। তবে বিতর্কিত বিষয়গুলোতে কিছু আপসের ইঙ্গিত দিলেও সম্ভাব্য সমঝোতার রূপরেখা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। ইইউ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বিষয়গুলো তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, বর্তমান জটিলতা কাটাতে আয়ারল্যান্ডের সম্মতি ছাড়া ব্রিটেন ও ইইউ-র মধ্যে কোনোরকম বোঝাপড়া সম্ভব নয়। গতকালই ব্রিটেনের ব্রেক্সিট বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্টিফেন বার্কলে ব্রাসেলসে ইইউয়ের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ের সঙ্গে আলোচনা করার কথা। আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য সব পক্ষের ওপর চাপ বাড়ছে। এখনো ব্রিটেন যে সব প্রস্তাব পেশ করেছে, তার ভিত্তিতে কোনো সমঝোতা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ইইউ। তবে আইরিশ সীমান্ত সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি করতে এখনো আলোচনা চলছে। প্রস্তাবিত ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থার প্রকৃত ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প ছাড়া ইইউ কোনো চুক্তিতে আগ্রহী নয়। প্রায় ৩ বছর ধরে যা সম্ভব হয়নি, মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে তা কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৃহস্পতিবারের আলোচনায় কোন পক্ষ ছাড় দিয়েছে, সেই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে লিও ভারাদকর বলেন, এ ক্ষেত্রে ছাড় বা হারজিতের বিষয় বড় কথা নয়। জনসন নিজে এই আলোচনা সম্পর্কে নীরব থাকায় বিষয়টি নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে। তবে তিনি আশাবাদের ইঙ্গিত দিয়েছেন। উত্তর আয়ারল্যান্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্রিটিশ মন্ত্রী জুলিয়ান স্মিথ জানিয়েছেন, সম্ভাব্য বোঝাপড়া বানচাল করতে সেই প্রদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের হাতে ভেটো শক্তি থাকবে না। শেষ পর্যন্ত বরিস জনসন ইইউর সঙ্গে রফা করতে পারলেও ব্রিটেনের পার্লামেন্ট সেই চুক্তি অনুমোদন করবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। জনসনের পূর্বসূরি তেরেসা মে তিন-তিন বার চেষ্টা করেও পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে পারেননি। ইইউ ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে নারাজ। আগামীকাল জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগামী সপ্তাহের ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে আলোচনায় বসছেন। চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের কুপ্রভাব যতটা সম্ভব সীমিত রাখার লক্ষ্যে দুই  নেতা উদ্যোগ নেবেন বলে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর