বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
আগাম নির্বাচন

অবশেষে ‘হ্যাঁ’ বলল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট

অবশেষে ‘হ্যাঁ’ বলল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট

পার্লামেন্টে উচ্ছাসিত প্রধানমন্ত্রী জনসন

ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করতে ব্যর্থ হলেও আগাম নির্বাচনের প্রশ্নে অবশেষে সফল হলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। অনেক চেষ্টার পর অবশেষে ঐক্য দেখালো ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। ফলে ডিসেম্বর মাসে আগাম নির্বাচনের পরেই ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আজই শেষ হওয়ার কথা ছিল নির্ধারিত ব্রেক্সিট চুক্তির। চলতি সপ্তাহে ইইউ তিন মাস পিছিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়নের নতুন সময় নির্ধারণ করেছে। ব্রেক্সিট সংক্রান্ত অচলাবস্থার জন্য এর আগের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বারবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে দায়ী করেছেন। একমাত্র চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ হলেও এতকাল তারা কোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ঐক্য দেখাতে পারেননি। তারা কী চান না, শুধু সেটাই বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে সেই প্রবণতা ভেঙে তারা আগাম নির্বাচনের পথ সুগম করে দিলেন। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রস্তাব মেনে তারা ১২ ডিসেম্বর নির্বাচন আয়োজন করার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

ইইউ ব্রেক্সিট তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ায় চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানো গেছে, এ পরিস্থিতিতে আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব সমর্থন করবেন বলে সোমবার সকালেই ঘোষণা দিয়েছিলেন বিরোধী লেবার দলের নেতা জেরমি করবিন। করবিনসহ তার দলের ১২৭ জন এমপি নির্বাচনের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও ১১ জন বিরুদ্ধে ভোট দেন। দলটির শতাধিক এমপি ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। লিবারেল ডেমোক্রেট ও এসএনপি আগাম নির্বাচনের পক্ষে আগেই তাদের সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছিল। এর আগে তিনবার আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব তুলেও ব্যর্থ হয়েছিলেন জনসন। কিন্তু মঙ্গলবার মাত্র ছয় ঘণ্টা বিতর্কের পর এমপিরা প্রস্তাবটি অনুমোদন করেন।

১৯২৩ সালের পর ব্রিটেনে ডিসেম্বর মাসে, বড় দিন উৎসবের ঠিক আগে কখনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু সংসদে ব্রেক্সিট নিয়ে লাগাতার অচলাবস্থা কাটাতে জনসন এ ছাড়া অন্য কোনো পথ দেখছেন না। তার আশা, ভোটারদের বিপুল সমর্থন পেয়ে তিনি সরকার গড়তে পারবেন। সে ক্ষেত্রে পার্লামেন্টে টোরি দলের নিজস্ব সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তিনি ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করিয়ে ৩১ জানুয়ারি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে পারবেন। উল্লেখ্য, জনসনের পূর্বসুরি তেরেসা মে-ও ২০১৭ সালে আগাম নির্বাচন ডেকে বিপুল জনসমর্থনের আশা করেছিলেন। কিন্তু সে যাত্রায় টোরি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে জোট সরকার গড়তে বাধ্য হয়েছিল। জনমত সমীক্ষায় টোরি দল এগিয়ে থাকলেও ডিসেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কেও বিশেষজ্ঞরা এই মুহূর্তে কোনো পূর্বাভাষ দিতে পারছেন না।  তবে টোরি দলের পরাজয় ঘটলে অথবা কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ আবার অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর