কোনোভাবেই শান্তিতে থাকতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রায় দুই বছর ঘুম কেড়ে নেয় গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ। প্রায় দুই বছর তদন্তের পর তদন্তকারী সাবেক এফবিআই প্রধান বরার্ট মুলার ট্রাম্পকে অভিযোগ থেকে অনেকটা মুক্তি দেন। সেই ভয়াবহ ‘নির্ঘুম’ থেকে মুক্তি পেলেও এবার নতুন করে পুরোপুরি ‘ঘুম’ কেড়ে নিয়েছে তাকে ঘিরে অভিশংসন নিয়ে তদন্ত। আর সেই তদন্তের আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে তারই আর্থিক পৃষ্ঠপোষক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে মার্কিন রাষ্ট্রদূত গর্ডন সন্ডল্যান্ড। তিনি কংগ্রেসের তদন্ত কমিটির সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও আরও চাপের মুখে পড়লেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কিনা, সংসদের নিম্ন কক্ষে সেই তদন্তের প্রকাশ্য শুনানি চলছে। তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে যদি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন মারাত্মক অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল সে ক্ষেত্রে সংসদের নিম্ন কক্ষে ইম্পিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করতে বদ্ধপরিকর। তবে উচ্চ কক্ষেও সেই উদ্যোগকে সফল করতে হলে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের একাংশের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। ডেমাক্র্যাটদের আশা, ধীরে ধীরে ক্ষমতাসীন দলের ঐক্যে ফাটল ধরবে। বুধবার তদন্তের শুনানির চতুর্থ দিনে সেই আশা আরও জোরদার হয়েছে। এদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নে মার্কিন রাষ্ট্রদূত গর্ডন সন্ডল্যান্ড সাক্ষী হিসেবে তদন্ত কমিটির সদস্যদের জেরার মুখে বিস্ফোরক দাবি করেন। সন্ডল্যান্ডের মতে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে জো বাইডেন ও তার পুত্রের কার্যকলাপ সম্পর্কে দু-দুটি তদন্তের জন্য ইউক্রেনের ওপর ট্রাম্প যে প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছিলেন, সে বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কার্যত সব কর্তাব্যক্তিই অবগত ছিলেন। এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নাকি জানতেন, ট্রাম্প কংগ্রেস অনুমোদিত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সাহায্য বন্ধ রেখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন। দাবি মানলে ট্রাম্প সামরিক সাহায্যের ছাড়পত্র ছাড়াও হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণের টোপও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আনা হচ্ছে। সন্ডল্যান্ড আরও বলেন, এ ক্ষেত্রে তিনি প্রেসিডেন্টের নির্দেশ পালন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ফলে তাকে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জুলিয়ানির সঙ্গে সহযোগিতা করতে হয়েছিল। তার মতে, বিষয়টি মোটেই আর গোপন ছিল না।