বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ট্রাম্পকে অভিশংসনের আয়োজন সম্পন্ন

ট্রাম্পকে অভিশংসনের আয়োজন সম্পন্ন

নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ব্যক্তিগত ঝামেলামুক্ত সময় খুব একটা পার করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে রাশিয়ার আঁতাত নিয়ে প্রায় তিন বছর চরম দুশ্চিন্তায় কাটাতে হয়েছে তাকে। বর্তমান ঝামেলা অভিশংসন বা ইমপিচমেন্ট নিয়ে। নিজেকে সব সময় নির্দোষ দাবি করলেও যারা তার বিরুদ্ধে বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট নেতারা অভিশংসনের যে অভিযোগ আনছেন তাদের গালিগালাজ করছেন। তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু সেসবে কাজ না হওয়ায় স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে আলাদা করে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তাতে তিনি নমনীয় ভাব দেখালেও স্পিকার তার কথায় টলেননি। বরং অভিশংসনের সিদ্ধান্তের কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

আসছে বড়দিনের আগেই মার্কিন নিম্নকক্ষে এ প্রস্তাব ওঠার ও পাস হওয়ার কথা। এর মধ্যে গত সপ্তাহে পেলোসি ঘোষণা করেন, ‘তাকে অভিশংসন করা ছাড়া অন্য কোনো পথ আমাদের জন্য খোলা নেই। শাসনতন্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার প্রতিনিধি পরিষদের বিচার বিভাগীয় কমিটির সর্বশেষ উন্মুক্ত শুনানি শেষ হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্রাম্পের অভিশংসনের উদ্দেশ্যে ডেমোক্র্যাটিক দল অবিলম্বে ‘অভিশংসন ধারা’ বা ‘আর্টিকেলস অব ইমপিচমেন্ট’ প্রণয়নে সব ব্যবস্থা নেবে। এদিন সন্ধ্যা থেকে রুদ্ধদ্বার কক্ষে সেই লক্ষ্যে বিচার বিভাগীয় কমিটির সদস্যরা স্পিকার পেলোসির সঙ্গে মিলিত হন। এ সপ্তাহের মধ্যে এ ধারাগুলো প্রণীত হতে পারে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ইউক্রেনের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের নিজের স্বার্থে ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন; যাতে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার পুত্রের ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করে। আর তা না করলে সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। এ তদন্ত শুরু না হওয়া পর্যন্ত ট্রাম্পের নির্দেশে ইউক্রেনের জন্য কংগ্রেসের বরাদ্দকৃত প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য আটকে দেওয়া হয়। ২৫ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে ওই কথা হয়। কিন্তু বিশ্লেষকদের দাবি, বাইডেন বা তার পুত্র বেআইনি কিছু করেছেন এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি।

সোমবারের উন্মুক্ত শুনানিতে বিচার বিভাগীয় কমিটির প্রধান কংগ্রেসম্যান জেরি ন্যাডলার সোজাসাপ্টা ভাষায় জানান, ট্রাম্প জাতীয় স্বার্থের বদলে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ পর্যন্ত দুজন প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হয়েছেন। ১৮৬৮ সালে প্রেসিডেন্ট এন্ড্রু জনসন ও ১৯৯৮ সালে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। তারা অবশ্য ক্ষমতা থেকে অপসারিত হননি। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট তাদের অপসারণের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। মার্কিন উচ্চকক্ষে ট্রাম্পের দলের প্রাধান্য। সুতরাং তিনিও এ অবস্থা ওতরাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর