শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারতে ইন্টারনেট বন্ধের রেকর্ড

ভারতে ইন্টারনেট বন্ধের রেকর্ড

বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উত্তাল ভারতের যেসব শহরে রাস্তায় নেমে এসেছে বিক্ষোভকারীরা  সেখানেই কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিচ্ছে। আর এটাই আরেক অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে- কারণ এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে একটি দেশ এক বছরে সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার রেকর্ড গড়েছে।

ভারতে উত্তেজনার মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর একটি টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লেখেন, ‘আমি আসামে আমার ভাই বোনদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, নাগরিকত্ব সংশোধন বিল নিয়ে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমি তাদের নিশ্চিত করতে চাই যে কেউ তাদের অধিকার, আত্মপরিচয় এবং দারুণ সংস্কৃতি কেড়ে নিতে পারবে না। এর বিকাশ অব্যাহত থাকবে।’ কিন্তু সমস্যা হলো এই টুইট দেখার জন্য যে ইন্টারনেট প্রয়োজন ছিল সেটি ছিল না। তাই হাজার হাজার বিক্ষোভের মধ্যে এটি ঠিক নিশ্চিত না যে কতজন এই টুইট দেখতে পেরেছে। ইন্টারনেট শাটডাউন ট্র্যাকারের হিসেবে চলতি বছর দেশটিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছে মোট ৯৩ বার। কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দোহাই দিয়ে সেবা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া। তবে নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে তুমুল বিক্ষোভের কারণে শুধু আসামেই নয়, ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলীগড়ের মতো বেশ কিছু এলাকাতেও। তবে ভারতের কর্মকর্তারা বলছেন শান্তির জন্যই এটি দরকার ছিল। এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি ইন্টারনেট বন্ধের নজির আছে কেবল চীন আর মিয়ানমারে। তবে ভারত এবারেই যে সবচেয়ে বেশিবার বন্ধ করল তাও নয়। ২০১৮ সালে মোট প্রায় ১৩৪ বার ইন্টারনেট বন্ধের উদাহরণ আছে। আর এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে পাকিস্তান। তারা গত বছর ১২ বার ইন্টারনেট বন্ধ করেছে। বহু ভারতীয় যারা বিশ্বের অন্যতম দ্রুতবর্ধনশীল ইন্টারনেট বাজারের সঙ্গে জড়িত- তারা এর তীব্র সমালোচনা করছেন মত প্রকাশে বাধা হিসেবে বিবেচনা করে। সমালোচনায় এটিও উঠে  আসছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদি তার নির্বাচন প্রচারে ইন্টারনেটকেই সবচেয়ে বড় উপকরণ হিসেবে  ব্যবহার করেছে। এমনকি ডিজিটাল ইন্ডিয়ারও কথা বলছেন তিনি, যার লক্ষ্য দেশটির ডিজিটাল অবকাঠামো শক্তিশালী করা। তিনি এমনও বলেছেন যে, তিনি ১০০ কোটিরও বেশি ভারতীয়কে অনলাইনে দেখতে চান এবং সেজন্য সস্তা, দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড গ্রামীণ এলাকায় ছড়িয়ে দিতে চান। কিন্তু এবার ক্ষমতায় আসার পর যেভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করার সংখ্যা বাড়ছে তাতে  প্রশ্ন উঠছে যে তিনি আসলে ডিজিটাল ইন্ডিয়া বলতে  কী বোঝাতে চেয়েছেন। বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ খবর