শিরোনাম
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এনআরসি নিয়ে ‘ব্যাকফুটে’ অমিত শাহ

এখনো মন্ত্রিসভার বৈঠকে বা সংসদে এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি

এনআরসি নিয়ে ‘ব্যাকফুটে’ অমিত শাহ

গোটা ভারত এখন উত্তপ্ত এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি), সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধন আইন) নিয়ে। আর এর সঙ্গে অবশ্য নতুন করে যোগ হয়েছে এনপিআর (জনসংখ্যা তালিকা)। চারদিকে যখন চরম উত্তেজনা তখন এনআরসি নিয়ে সুর নরম করে কথা বললেন বিজেপির সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অবশ্য এই সুরে প্রথম কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এবার মুখ খুললেন অমিত শাহ।

কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন, এনআরসি সরকারের বিবেচনায়ই নেই। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, তা হলে সংসদে অমিত শাহ যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সরকার দেশজুড়ে এনআরসি করবে, তার কী হবে? বিভ্রান্তি কাটাতে এবার মুখ খুলেছেন অমিত নিজেই। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকার দিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, ‘মোদিজি ঠিকই বলেছেন। এখনো পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বা সংসদে এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তাই দেশজুড়ে এনআরসি নিয়ে বিতর্ক অর্থহীন। কারণ, এই মুহূর্তে এনআরসি নিয়ে সরকার কোনো আলোচনা করছে না।’ অমিত শাহর এই কথায়ও বিতর্ক থামছে না। বিরোধীরা বলছেন, অমিত শাহর কথা থেকে বোঝা যাচ্ছে, এখন সরকার এনআরসি নিয়ে আলোচনা করছে না ঠিকই, তাই বলে ভবিষ্যতে যে করবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? বিশেষ করে কিছুদিন আগে তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, দেশজুড়ে এনআরসি হবেই।

এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে কথা বলেছিলেন লেখক, বিশ্লেষক এবং অবসরপ্রাপ্ত আমলা অমিতাভ রায়কে। তিনি বলেন, ‘এনআরসি, সিএএ এবং এনপিআরএকে অন্যের সঙ্গে যুক্ত। এগুলোকে আলাদাভাবে দেখা ঠিক হবে না। সরকার আগামী দিনে দেশজুড়ে এনআরসি করতেই পারে। আর সরকার যে একের পর এক এ ধরনের বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসছে, তার পেছনে আরেকটা উদ্দেশ্য আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তা হলো- জিনিসের দামের দিকে লোকের নজর যাবে না। অন্য সমস্যার দিকে দৃষ্টি পড়বে না।’ অমিত শাহ অবশ্য দাবি করছেন, এনআরসি ও এনপিআর দুটো একদম আলাদা। দুটোর কাজ উপযোগিতা সবই ভিন্ন। এনপিআর করা হচ্ছে যাতে সরকার ঠিক লোকের কাছে সুবিধা পৌঁছে দিত পারে। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদ মনীষ তিওয়ারির মতে, এনআরসির ভিতর এনপিআর ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এনপিআর আদতে হয়ে যাচ্ছে এনআরসির প্রথম ধাপ। প্রাথমিক সব তথ্য সেখান থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। তা হলে মোদি-শাহ কি দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ আপাতত থামাতে এই অবস্থান নিলেন? পরে কি তারা পছন্দসই সময়ে আবার এনআরসি করার জন্য উদ্যোগী হবেন? নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত রায় চৌধুরী মনে করছেন, বিক্ষোভের জন্যই বিজেপি সরকার এনআরসি নিয়ে পিছু হঠেছে। তিনিও মনে করেন এনপিআর তৈরি হয়ে গেলে এনআরসি করাটা কোনো মুশকিলের কাজ হবে না। অমিত শাহ দাবি করছেন, ‘লোকে এখন সিএএ নিয়ে আসল কথাটা বুঝতে পেরেছে। সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য নেওয়ার জন্য নয়। এনআরসি ও এনপিআর নিয়েও ভুল বুঝতে পারবে।’ কিন্তু বিরোধীরা তা কিছুতেই মানতে চাইছেন না। তারা বলছেন, আপাতত এক পা পিছলেও ভবিষ্যতে বিজেপি আবার তাদের আগের পরিকল্পনা কার্যকর করতে উদ্যোগী হবে। শেষ পর্যন্ত এনআরসির দিকে এগোতেই পারে মোদি সরকার। -ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর