শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

‘জ্বলন্ত কূপে ডিনামাইট ছুড়লেন ট্রাম্প’

‘জ্বলন্ত কূপে ডিনামাইট ছুড়লেন ট্রাম্প’

ইরানি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ায় মার্কিন কংগ্রেসে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হত্যার ঘটনার পর মার্কিন কংগ্রেসে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, ইরান অবশ্যই এ ঘটনার জবাব দেবে। এক টুইটার বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনার দ্বারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জ্বলন্ত কূপে ডিনামাইট ছুড়ে দিয়েছেন।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, আমরা এ ধরনের উসকানিমূলক ও অপ্রাসঙ্গিক কর্মকান্ডে আমেরিকান সৈন্য, কূটনীতিক ও অন্যদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। এ ছাড়াও ডেমোক্র্যাটিক নেতারা এরই মধ্যে এক বিবৃতিতে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

নিউ মেক্সিকোর সিনেটর টম উডাল বলেন, এই পদক্ষেপ অপ্রত্যাশিত পরিণতি ডেকে আনতে পারে। মার্কিন সেনা ও নাগরিকরা এখন আরেকটি যুদ্ধে জড়ানোর ঝুঁকিতে আছে। তিনি বলেন, ‘আমি কংগ্রেসের দুই পক্ষের সদস্যকে সাহসী পদক্ষেপ  নেওয়ার আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে আরেকটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই ট্রাম্পকে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানাচ্ছি।’ কয়েকজন ডেমোক্র্যাটের দাবি, এই হামলা চালানোর এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের ছিল না। সেজন্য তার কংগ্রেসের অনুমতির প্রয়োজন ছিল। সিনেটর ক্রিস মারফি বলেন, সোলাইমানি নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু ছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র কী কোনো অনুমতি নিয়ে হামলা চালিয়েছে। ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর এই ব্যক্তির ওপর এমন হামলায় আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা অনেক বেশি। এটা  জেনেও কেন কংগ্রেসের অনুমতি নেওয়া হলো না সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

তবে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তকে কেউ কেউ স্বাগত জানিয়েছেন। ট্রাম্পের মিত্র রিপাবলিকানরা এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেছেন, এতে করে ইরানকে কঠিন বার্তা দেওয়া হয়েছে। সাউথ ক্যারোলিনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম একাধিক টুইট করে জানান, ‘মার্কিন রক্তে রঞ্জিত ইরান বড় এক ধাক্কা খেয়েছে। আয়াতুল্লাহর প্রশাসনে অন্যতম হিংস্র সদস্য ছিলেন  সোলাইমানি।’ আরকানসাসের সিনেটর টম কটন বলেন, অনেক বছর ধরে ইরানের সন্ত্রাসের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। আজ তিনি তার প্রাপ্য বুঝে পেয়েছেন। তার হাতে প্রাণ হারানো মার্কিনিরা ন্যায়বিচার পেয়েছে। সোলাইমানির মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্র আরও নিরাপদ।

এদিকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, সোলাইমানি একজন খুনি ছিলেন, হাজার হাজার মার্কিনির হত্যার জন্য দায়ী তিনি। কিন্তু এই পদক্ষেপে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে এবং অনেক মানুষ প্রাণ হারাবে।

এদিকে জেনারেল সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর গতকাল জুমার নামাজের পর রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করে লাখ লাখ ইরানি। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই পথে নামে। অনেকে এ সময় বিলাপ করে কাঁদছিলেন। বিক্ষোভকারীরা মার্কিনবিরোধী স্লোগান দেয়। এ সময় অনেকে মার্কিন পতাকায় আগুল লাগিয়ে দেয়।

সর্বশেষ খবর