রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ট্রাম্পের জন্য কী অপেক্ষা করছে

ট্রাম্পের জন্য কী অপেক্ষা করছে

জেনারেল সোলাইমানির হত্যার প্রতিবাদে তেহরানে বিক্ষোভ -এএফপি

ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে হত্যার পরিণতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগ শুরু হয়েছে। তেহরান ইতিমধ্যে কঠোরতম প্রতিশোধের হুমকিও দিয়ে রেখেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য কী  অপেক্ষা করছে সামনে- তা এখন দেখার বিষয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ‘অপরাধীদের জন্য ভয়াবহ প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে।’ ইরানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রমজান শরিফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইরান এবং আমেরিকা তোমরা কড়া জবাবের জন্য অপেক্ষা করো।’

সূত্র জানায়, ইসরায়েলের পাশাপাশি জর্জ বুশ এবং বারাক ওবামা পর্যন্ত তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেও পরিণতির কথা ভেবে তারা ফিরে এসেছিলেন। এ কারণে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের সম্ভাব্য প্রার্থী জো বাইডেন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘একটা বারুদের বাক্সে ডিনামাইট ছুড়ে দিয়েছেন।’ তিনি বলেছেন, ‘আমরা হয়তো মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বড় ধরনের যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে গেলাম।’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কাসেম সোলাইমানি মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রæ হওয়া সত্ত্বেও তার পূর্বসূরিরা যে ঝুঁকি নিতে চাননি, ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন কেন তা নিলেন? পেন্টাগনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তা হলো- কাসেম সোলাইমানি ইরাকে মার্কিন কূটনীতিক এবং সৈন্যদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছিল, সুতরাং আগে থেকেই তাকে হত্যা করে সেসব পরিকল্পনা নস্যাৎ করা হলো। তবে এমন সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ হত্যাকান্ড  ঘটালেন যখন কিছু দিন আগেই তার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট অনুমোদন করেছে মার্কিন কংগ্রেস, এবং এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফলে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা ইতিমধ্যেই এ সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি দেখতে শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের সাংবাদিক জুলিয়ান বার্গার লিখেছেন, নভেম্বরে নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সোলাইমানিকে হত্যার এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি মনে করছেন, ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার যে ঘটনা বারাক ওবামার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের প্রচারণায় প্রধান একটি বিষয় হয়ে উঠেছিল, ট্রাম্প হয়তো সে রকমই কিছু করতে চেয়েছেন। বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন বলছেন, অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করে আমেরিকানরা এখন কেন এ ‘ট্রিগার’ টিপল, তার কারণ হয়তো প্রেডিসন্ট ট্রাম্প মনে করেছেন এ হত্যাকান্ডের যে ঝুঁকির মাত্রা তার চেয়ে সুবিধার পাল্লা ভারি।

কী করতে পারে ইরান : ইরান যে তার হত্যার একটা জবাব দেবে, তা নিশ্চিত। সোলাইমানি এতদিন ধরে দেশের বাইরে ইরানের যে প্রভাব প্রতিপত্তি তৈরি করেছেন, তা টিকিয়ে রাখার সর্বোত চেষ্টা ইরান করবে। ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে একটা যুদ্ধ লেগে যেতে পারে, এ সন্দেহ বছরখানেক ধরে চলছিল, কিন্তু সেই সঙ্গে যুদ্ধ এড়ানোর একটা চেষ্টাও তলে তলে চলছিল। কিন্তু বিবিসির প্রধান আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা লিস ডুসেট মনে করছেন, সোলাইমানি এবং ইরাকি একটি শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীর (পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স) প্রধান আবু মাহদি আল মোহানদিসকে হত্যার পর যুদ্ধ এড়ানোর সেই চেষ্টা ধসে পড়বে সন্দেহ নেই। কিন্তু কীভাবে ইরান প্রতিশোধ নেবে- পরিষ্কার করে অনুমান করা শক্ত। ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকেই হয়তো একটা ছক তৈরি হবে। লিস ডুসেট মনে করেন, ‘বদলা নেওয়ার নানা রাস্তা এবং উপায় ইরানের রয়েছে।’ বিবিসি

সর্বশেষ খবর