সংঘাতরত ইরান ও আমেরিকা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না করলে কোনো পক্ষই লাভবান হতে পারবে না। এ সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের আলোচনায় উঠে এসেছে এমন আশঙ্কার কথা।

মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহতের পর দুই পক্ষই একে অপরকে নানাভাবে হুঁশিয়ারি-হুমকি দিয়ে আসছে। কিন্তু দুই পক্ষই বলছে, তারা কোনো যুদ্ধ শুরু করতে চায় না। এর মধ্যেই গতকাল ইরাকে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটির সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে। অবশ্য ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, এতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, সোলাইমানি হত্যার মাধ্যমে আমেরিকা যুদ্ধ শুরু করেনি, বরং যুদ্ধ ঠেকিয়েছে। অন্যদিকে, ইরানও এর প্রতিশোধ নিতে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর পাল্টা হামলা না হলে আপাতত শান্ত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে। এ বিষয়ে ডয়েচে ভেলের ফার্সি বিভাগের সাংবাদিক জামশেদ বাজরিগর বলেন, ‘ইরান যদি মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সেনা সরানোর দাবির বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নেয়, তা আমেরিকা মানবে না। ফলে আলোচনায় না বসলে এ সংঘাত চলবে।’ ইরানের বাইরে ইরানের স্বার্থ রক্ষায় সামরিক দিকগুলোর দায়িত্ব ছিল কুদস ফোর্সের। সেই ফোর্সেরই কমান্ডার ছিলেন জেনারেল সোলাইমানি। ফলে সোলাইমানির মৃত্যুর পর মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার মাধ্যমে কুদস বাহিনী যে দুর্বল হয়ে পড়েনি, এমন একটি বার্তা ইরান বিশ্বকে দিতে চেয়েছে বলেও মনে করেন জামশেদ। এমন হামলা-পাল্টা হামলা, হুমকি, হুঁশিয়ারির বিপদের দিকটাও মনে রাখতে বলেছেন ডয়েচে ভেলে বাংলা বিভাগের সাংবাদিক সঞ্জীব বর্মণ। তিনি বলেন, ‘এসব করতে করতে যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে, যাতে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। বড় কিছু হলে আমেরিকা বাধ্য হবে আরও বড় আকারের হামলা চালাতে, তখন ইরানও আবার হামলা চালাবে।’ এর ফলে বিভিন্ন পরাশক্তি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানান সঞ্জীব। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি রাশিয়া ও চীন নানাভাবে ইরানকে সহায়তা করে থাকে। এরকম একটি সংঘাতের ক্ষেত্রে তাদের পক্ষেও হাত গুটিয়ে থাকা সম্ভব হবে না। তখন যুদ্ধটা বৃহত্তর পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি ইসরায়েল ও সৌদি আরবও এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।’