শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্রিটেনকে বিদায় জানাচ্ছে ইউরোপ

আজ কার্যকর হচ্ছে ব্রেক্সিট

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বুধবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করেছে। আজ রাতে ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ ত্যাগ করতে চলেছে। এবার শুরু হচ্ছে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার পালা। প্রায় ৪৭ বছর সদস্য থাকার পর আজ মধ্যরাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেবে ব্রিটেন। তার আগে বুধবার সেই লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলো। ব্রিটেনের পার্লামেন্টের দুই কক্ষের পর এবার ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করেছে। পার্লামেন্টে ৬২১ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে এবং ৪৯ জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। এবার শুধু বাকি ইইউ সদস্য দেশগুলোকে এক লিখিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই চুক্তি অনুমোদন করতে হবে। আগামী কয়েক দিনে ব্রাসেলসে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে।

এই প্রথম কোনো সদস্য দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করছে। তাই বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ঐতিহাসিক ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি কিছু আবেগঘন মুহূর্ত দেখা দেয়। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, ‘আমরা চিরকাল তোমাদের ভালোবাসবো এবং কখনই দূরে থাকব না।’ পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট সংক্রান্ত সমন্বয়ক গি ফ্যারহোফস্টাট সদস্যদের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আবেদন করেও বলেন, ‘আমরা তোমাদের অভাব বোধ করব। তবে এই ভোটের মাধ্যমে চিরবিদায় জানানো হচ্ছে না। বরং আশা প্রকাশ করা হচ্ছে যে আবার দেখা হবে।’ ব্রিটেন কোনো একদিন আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফিরে আসবে বলে আরও কিছু সদস্য আশা প্রকাশ করেন। তবে ব্রিটেনের ব্রেক্সিট পার্টির প্রধান নাইজেল ফারাজ বলেন, একবার ত্যাগ করার পর ব্রিটেন কোনোদিন আর এই রাষ্ট্রজোটে ফিরে আসবে না। উল্লেখ্য, ব্রেক্সিটের লক্ষ্যে প্রায় দুই দশকের প্রচেষ্টার পর ফারাজ অবশেষে সাফল্য পাচ্ছেন।

ব্রেক্সিট সত্ত্বেও বর্তমান পরিকল্পনা অনুযাযী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না। এই অন্তর্র্বর্তীকালীন পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে। ব্রিটেন ঠিক সময়ে বাণিজ্য চুক্তির আশা করলেও ইইউ নেতারা এত কম সময়ে চূড়ান্ত বোঝাপড়া সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইইউ চাপের মুখে তড়িঘড়ি করে কিছু একটা করবে না।  ইইউ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ স্থির করে তা রক্ষা করাই জরুরি।

উল্লেখ্য, ইইউ ব্রিটেনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, একমাত্র ইইউ মানদ- ও বিধিনিয়ম মেনে চললে তবেই ইউরোপের অভ্যন্তরীণ বাজারে অবাধ প্রবেশের অধিকার অটুট থাকবে। অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যে কোনো মূল্যে চলতি বছরের শেষেই সম্পর্ক ত্যাগ করতে বদ্ধপরিকর।

সর্বশেষ খবর