ক্যান্সার সারা বিশ্বেই একটি সংকট। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-হু এ রোগ নিয়ে আরও ভয়ানক আশঙ্কার কথা জানাল। সংস্থাটি বলছে, আগামী ২০ বছরের মধ্যে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় ক্যান্সারে মৃত্যুর পরিমাণ বাড়বে দ্রুত। এ প্রকোপ ৮১ শতাংশ বাড়তে পারে।
বিশ্বের ১৩৪টি দেশে অকালে প্রাণ ছিনিয়ে নিচ্ছে ক্যান্সার। প্রাণঘাতী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩০ থেকে ৬৯ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে জীবন। আর ২০ বছরের মধ্যে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে। শুধু ভারতেই ১০ শতাংশ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। তখন ভারতে প্রতি ১৫ জনের মধ্যে একজন এ রোগে মারা যাবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশেও ক্যান্সারের প্রভাব বাড়ছে। ২০১৮ সালে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে দেড় লাখের বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখের বেশি। গতকাল ছিল বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। সে উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে ক্যান্সার নিয়ে ভয়াবহ ভবিষ্যতের আশঙ্কা। তবে এর মধ্যে আশার বিষয় হলো, যদি আগামী ১০ বছরে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য খরচ করা যায়, তাহলে ৭০ লাখ লোকের জীবন বাঁচানো সম্ভব। হু’র দাবি, যদি লোকের কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের উপায় থাকে, তাহলে পরিস্থিতি বদলে যাবে। তখন প্রথম পর্যায়ে ক্যান্সার চিহ্নিত করা সম্ভব হবে, চিকিৎসা হবে এবং রোগ সেরে যাবে। রিপোর্ট বলছে, ধূমপানের ফলে ২০১৮ সালে ২১ লাখ লোক নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত ও ১৮ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছে। যেসব দেশে ছেলে ও মেয়েরা ধূমপান করে, সেখানে ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যা ৯০ শতাংশ। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডার মতো দেশে যেখানে ধূমপানের প্রবণতা কমেছে, সেখানে ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যাও কমেছে। বিশ্বজুড়ে নারীরা সব থেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে স্তন ক্যান্সারে। ২০১৮ সালে ২১ লাখ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে, আর ৬ লাখ ২৭ হাজার মহিলার এ রোগে মৃত্যু হয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ধূমপান তো বটেই, তার সঙ্গে অন্য সব ধরনের তামাকজাত জিনিস সেবন ও খাওয়ার প্রবণতা। শুধু সিগারেট নয়, অত্যধিক মদপানের জন্যও এই ঘাতক রোগ হতে পারে। এ ছাড়া অতিবেগুনি রশ্মির প্রাধান্য, খাদ্যাভ্যাস ঠিক না হওয়াও ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। হুর রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার, জীবনশৈলীর বদল করা দরকার। এএফপি