মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

আবার শরণার্থী সংকটের মুখে ইউরোপ

সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের উত্তেজনা শুরুর পর শরণার্থী চুক্তি থেকে সরে এসেছে আঙ্কারা

আবার শরণার্থী সংকটের মুখে পড়েছে ইউরোপ। তুরস্কের সরকার শরণার্থী চুক্তি অগ্রাহ্য করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন ইউরোপগামী শরণার্থীপ্রত্যাশীরা তুরস্কে গিয়ে আটকা পড়ত। ইউরোপের সঙ্গে শরণার্থী চুক্তি থাকায় তুরস্ক তাদের ইউরোপে যেতে দিত না। কিন্তু সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের উত্তেজনা শুরু হওয়ার পর তুর্কি সরকার সেই চুক্তি থেকে সরে এসে ইউরোপের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দিয়েছে। ফলে হু হু করে হাজার হাজার শরণার্থী ইউরোপ পানে দৌড়াচ্ছে।

পরিস্থিতি সামলাতে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল জরুরি বৈঠকে বসছেন। এদিকে গতকাল গ্রিস সরকার ১০ হাজার শরণার্থীকে আটকে দিয়েছে। ২০১৫ সালে গোটা বিশ্বে যুদ্ধাবস্থা ও গৃহযুদ্ধের কারণে শরণার্থী সংকটের শুরু হয়। সে সময় লাখ লাখ শরণার্থী ইউরোপে পাড়ি জমায়। সে যাত্রায় তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক চুক্তির মাধ্যমে শরণার্থীদের ঢল বন্ধ করা গিয়েছিল। কিন্তু সিরিয়া সংকটের জের ধরে এই মুহূর্তে চরম বেকায়দায় পড়ে তুরস্ক ইউরোপের ওপর চাপ সৃষ্টি করার হাতিয়ার হিসেবে সেই চুক্তি অমান্য করছে। শুক্রবার থেকে শরণার্থীদের নতুন ঢল নামার কারণে দুই দিন ধরে গ্রিসের সীমান্তে চরম অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থলসীমান্ত ছাড়াও গ্রিসের তিনটি দ্বীপে রবিবার সকালে কমপক্ষে ৬০০ শরণার্থী নৌকায় করে এসে পৌঁছে। উল্লেখ্য, লেসবসসহ বিভিন্ন দ্বীপ বহুকাল ধরেই শরণার্থীদের কারণে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে।

রবিবার গ্রিসের পুলিশ সীমান্তে শরণার্থীদের ওপর কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। হাজার হাজার শরণার্থী পাথর ছুড়তে শুরু করায় সেখানে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিটসোটাকিস এক জরুরি বৈঠকের পর এই সংঘর্ষকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন। শরণার্থীদের উদ্দেশ্যে এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘বেআইনিভাবে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা করবেন না, আপনাদের ফেরত পাঠানো হবে।’

সিরিয়ায় বিমান হামলায় তুরস্কের ৩৩ জন সৈন্য নিহত হওয়ার পর তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সামরিক জোট ন্যাটোর ওপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সরকার এতকাল একতরফাভাবে সিরিয়ায় হস্তক্ষেপের পর বেকায়দায় পড়ে সহযোগীদের সহায়তা চাইছে বলে সমালোচকরা মনে করছেন। শরণার্থীদের তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার   করে নিন্দার মুখে পড়েও তুরস্ক উলটো গ্রিসের কড়া নীতির সমালোচনা করেছে।

সর্বশেষ খবর