চার ঘণ্টা ধরে টানা আলোচনা করলেন দুই দেশের দুই লৌহমানব রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান। রাজি হলেন সিরিয়ার ইদলিবে আপাতত যুদ্ধ বন্ধ বা অস্ত্রবিরতিতে। যদিও ইদলিবে যুদ্ধ হচ্ছে সিরিয়া ও তুর্কি বাহিনীর মধ্যে। তবে সিরিয়ার পক্ষে সব কিছুই করছে রুশ সেনাবাহিনী। ইদলিবই হলো সিরিয়ার একমাত্র এলাকা যা বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। আর রাশিয়ার মদদপুষ্ট সিরীয় প্রশাসন তা বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। তুরস্ক আবার বিদ্রোহী কয়েকটি গোষ্ঠীকে সাহায্য করছে এবং সেখানে প্রচুর সেনা পাঠিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে পুতিন ও এরদোগানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখা গেলেও সিরিয়ায় তারা বিরোধী পক্ষে অবস্থান করছেন। ২০১৫ সাল থেকে রাশিয়া আসাদকে সক্রিয় সমর্থন ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে তুরস্কের সমর্থন আসাদ বিরোধীদের প্রতি। আসাদ বাহিনীর বিমান হামলায় স¤গ্রতি এক দিনেই তুরস্কের ৩৪ সেনা নিহতও হয়েছে। আঙ্কারাও এরপর আসাদ বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় টানা হামলা চালাতে থাকে। আপাতত সেই অবস্থার ইতি ঘটল। পুতিন ও এরদোগানের দাবি, সাধারণ লোকের কষ্ট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০১৬ সালেও রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু এরদোগান চুক্তি ভঙ্গের পুরো সিরীয়াকে দায়ি করেছেন। তবে তিনি এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘যদি সিরিয়ার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে যায় তো তুরস্কও উপযুক্ত জবাব দেবে।’ গত ৩০ বছরে তুরস্কের সেনাবাহিনীতে একটি হামলায় এত বেশি প্রাণহানি হয়নি। এরপরও কেন ইদলিবে সিরিয়ার সঙ্গে লড়াই বন্ধ করতে চাইছেন এরদোগান? বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা জনাথন মার্কাস বলছেন পুতিনকে চটানো এরদোগানের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ এরদোগানের পছন্দ হোক আর না হোক, কোনোভাবেই আসাদের পরাজয় পুতিন চাইছেন না। কিন্তু ইদলিবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যে মীমাংসাই মস্কোতে হোক না কেন, তা কি টিকবে? মার্কাস মনে করছেন সম্ভবত টিকবে না। কারণ তুরস্ক জানে ইদলিব নিয়ে তারা যদি পিছু হটে, তাহলে সিরিয়ায় অন্যান্য যে এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেগুলোতেও সিরিয়া আক্রমণ করতে পারে। সেটি তুরস্কের জন্য আরও বড় সমস্যা হবে।