শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

শুক্রবার থেকেই আমেরিকায় স্বাভাবিক অবস্থা চান ট্রাম্প

শুক্রবার থেকেই আমেরিকায় স্বাভাবিক অবস্থা চান ট্রাম্প

নির্বাচনের বছর অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়লে ক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হবে। এমন আশঙ্কায় করোনা সংকট সত্ত্বেও মরিয়া হয়ে দেশে ‘স্বাভাবিক’ পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এটা আগামী শুক্রবার থেকেই। আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চললেও তিনি চরম বেকারত্ব নিয়েই বেশি দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বলে সমালোচকদের ধারণা।  করোনা সংকটে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ট্রাম্প বৃহস্পতিবার নতুন নীতিমালা পেশ করলেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে অচল হয়ে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর অর্থনীতিকে ফের সচল করতে গভর্নরদের জন্য তিন স্তরের পরিকল্পনা হাজির করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। এর আওতায় আগামী ১৪ দিনে রাজ্যগুলোর উদ্দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা কমিয়ে আনার ডাক দিয়েছেন ট্রাম্প। তারপর ধাপে ধাপে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর কড়াকড়ি শিথিল করা হবে।

প্রথম পর্যায়ে পরস্পরের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে পারলে দশজনের বেশি মানুষের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হবে। অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ কমানো, হোম অফিসের মাধ্যমে কাজ বাড়ানো এবং দফতরে কর্মীদের সাধারণ মেলামেশার জায়গা বন্ধ রাখা হবে। প্রথম পর্যায়ে স্কুল বন্ধ রাখা হলেও কড়া নিয়মের পূর্বশর্তে সিনেমা, রেস্তোরাঁ, স্টেডিয়াম, উপাসনালয় ইত্যাদি খোলা হবে। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলে দ্বিতীয় পর্যায়ে স্কুলসহ আরও কিছু স্থাপনা  খোলা হবে এবং সমাবেশের নিয়ম আরও শিথিল করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে কর্মক্ষেত্রে কোনো বাধানিষেধ থাকবে না।

‘যুক্তরাষ্ট্রকে ফের সচল করার’ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের সহায়তা করবে। কম ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে চলতি মাসেই লকডাউন তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পের পরিকল্পনায়। অন্য অঙ্গরাজ্যের বিধিনিষেধও ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে করোনাভাইরাসের দাপট অব্যাহত থাকার মধ্যেই ট্রাম্পের এ প্রস্তাব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তবে ট্রাম্পের নতুন এ নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের কভিড-১৯ বিষয়ক টাস্কফোর্সের সমর্থন রয়েছে বলে হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ের আগেই এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন। সবশেষ তথ্যানুযায়ী এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৬ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৩৪ হাজার। বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের যুদ্ধের পরবর্তী ফ্রন্ট হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্রকে খুলে দেওয়া। শাটডাউন দীর্ঘমেয়াদে টেকসই কোনো সমাধান নয়।’ দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ জনস্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মন্তব্য করছেন তিনি। ‘পরিস্থিতি অনুমোদন করলে’ সুস্থ নাগরিকদের কাজে ফেরার সুযোগ দেওয়া হতে পারে, তবে অঙ্গরাজ্যগুলো চাইলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ‘সামাজিক দূরত্ব’ এবং অসুস্থদের ঘরে থাকার নির্দেশনাগুলো চালু রাখতে পারে, বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ১৮ পৃষ্ঠার এ পরিকল্পনার প্রথম ধাপে এখনকার বিধিনিষেধের বেশির ভাগই বহাল রাখলেও ‘শারীরিক দূরত্বের নির্দেশনা মেনে’ রেস্তোরাঁ, প্রার্থনালয় ও খেলার মাঠ পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর