মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

১১ মাস আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন উহানের গবেষক

মহামারীর আকার নিতে পারে করোনা

১১ মাস আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন উহানের গবেষক

আমেরিকা বারবার বলছে, চীনের ল্যাবরেটরি থেকে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। আর এটা প্রমাণে মরিয়াও আমেরিকা। তবে চীন এই অভিযোগ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। বেইজিং-এর তরফে এই দাবি বারবার অস্বীকার করা হলেও প্রায় এক বছর আগে এই ভাইরাস নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন উহানের ওই ল্যাবরেটরির এক গবেষক। উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির অন্যতম প্রধান গবেষক শি ঝেংলি এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। ১১ মাস আগেই সতর্ক করেছিলেন তিনি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, এই ভাইরাস মহামারীর আকার নিতে পারে। শি ও তার টিম বাদুড় থেকে আসা এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন। উহানের ওই ল্যাবেই গবেষণা চলছিল। বাদুড়ের এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি ‘ব্যাট ওম্যান’ হিসবেও পরিচিত। জানা যায়, এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার তিন দিনের মাথাতেই নতুন করোনাভাইরাসের জিন নিয়ে তথ্য সামনে এনেছিলেন এই নারী গবেষক। কিন্তু তার উপদেষ্টারা তাকে চুপ করিয়ে রাখেন।

ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ডেপুটি ডিরেক্টর শি ও আরও তিন গবেষক মিলে ২০১৯-এর জানুয়ারিতে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। ওই বছরের মার্চ মাসে সেই গবেষণাপত্র প্রকাশ্যে আসে। সেখানেই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, সার্স, মার্স ও সোয়াইন অ্যাকিউট ডায়েরিয়া সিনড্রোমের পর ফের করোনাভাইরাস মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে। ওই তিনটি রোগই হয়েছিল করোনাভাইরাস সম্পর্কিত, যা বাদুড় থেকে আসে। আর এর মধ্যে দুটিই চীন থেকে ছড়িয়ে ছিল। ওই গবেষক লিখেছিলেন, সার্স কিংবা মার্সের মতো করোনাভাইরাস ফের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল, আর চীন থেকেই তা ছড়ানোর আশঙ্কা সব থেকে বেশি।’ তিনি আরও বলেছিলেন, গোড়া থেকেই সতর্কতা নেওয়া হলে, সংক্রমণ কমানো যেতে পারে। ওই গবেষণাপত্রে স্পষ্ট লেখা ছিল, চীনারা তাজা মাংসেই সব থেকে বেশি পুষ্টি বলে মনে করেন। আর এই খাদ্যাভ্যাসই সংক্রমণের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বেইজিং নিউজ-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-তেই শি ও তার টিম আবিষ্কার করে যে মানুষ বাদুড় থেকে সরাসরি সংক্রামিত হতে পারে। গত ফেব্রুয়ারিতে শি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, করোনা ভাইরাসের সঙ্গে ল্যাবের কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ গবেষণাগার থেকে ছড়ায়নি ভাইরাস। চীনও ওই দাবি বারবার উড়িয়ে দিয়েছে।

আমেরিকার দাবি, উহানের ওই ল্যাবরেটরি থেকেই লিক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস। উহানের মাছের বাজারের সঙ্গে ভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই মনে করছে বহু বিশেষজ্ঞ। আমেরিকা এই বিষয়ে রীতিমতো তদন্ত শুরু করেছে। চীনের ভাইরাস কালচার কালেকশনের কেন্দ্র এই গবেষণাগার। বলা যেতে পারে, এটাই এশিয়ার বৃহত্তম ভাইরাস ব্যাংক। যেখানে ১৫ হাজার ধরনের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এবোলার মতো ভাইরাস নিয়েও গবেষণা করে এরা। যেসব ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সে রকম ভাইরাস রয়েছে এই গবেষণাগারে।

সর্বশেষ খবর