বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

জলের চেয়ে সস্তা হলো জ্বালানি তেল

জলের চেয়ে সস্তা হলো জ্বালানি তেল

মে মাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল মজুত করার কোনো জায়গা থাকবে না এই আশঙ্কায় সোমবার আমেরিকার বাজারে তেলের দাম শূন্য ডলারের নিচে চলে যায়। এদিন বিশ্বের ইতিহাসে  প্রথমবারের মতো তেলের দাম নেমে এসেছে শূন্যেরও নিচে। অর্থাৎ, আপনাকে টাকা দিতে হবে না, বিক্রেতারাই উল্টো আপনাকে টাকা দেবেন, আপনি শুধু তাদের তেলটুকু নিয়ে যান।

করোনার জেরে লকডাউন চলছে প্রায় গোটা পৃথিবীতে। ফলে প্রতিদিন অপরিশোধিত তেলের দাম পড়ছে। মে মাসের জন্য মার্কিন অপরিশোধিত তেলের বাজার এদিন  খোলা মাত্র দাম ঋণাত্মক হয়ে যায়। যা অতীতে কখনো হয়নি। দিনের শেষে এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বিক্রি হয়েছে মাত্র এক সেন্ট-এ। ব্রেন্ট ক্রুডে অবশ্য দাম ২৫ ডলার   ছিল। করোনাভাইরাসের    প্রকোপে জ্বালানি তেলের চাহিদা এতটাই কমছে যে তা পানির থেকেও সস্তা হয়ে গেছে।

মার্চেন্ট কমোডিটি ফান্ডের      সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডগ কিং বলেন, ‘আজ বিশ্বব্যাপী তেল শিল্পের জন্য এক বিধ্বংসী দিন। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে এবং বাজারে কিছু দুর্ভাগ্যজনক লেনদেন হয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে মে মাসের শুরুতে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৪০ বছরে সর্বনিম্ন হবে। এমনো হতে পারে, তেল কেনার জন্য তেল সংস্থা ক্রেতাকে টাকাও দিতে পারে।

সোমবার আমেরিকায় জ্বালানি তেলের সূচক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টামিডিয়েট (ডব্লিউটিআই)-এর দাম অর্থাৎ  তেলের দাম শূন্য ডলারের নিচে চলে যায়। ১৯৮৩-র পর সর্বনিম্ন। রবিবার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি দাম ৪৫ শতাংশ কমে ১০.০১ ডলার হয়। যা ১৯৮৬ সালের পর সর্বনিম্নই শুধু নয়, ১৯৮২ সালের পর তেলের দামে একদিনে এতটা পতন হয়নি। উল্লেখ্য, শুক্রবার এশিয়ার বাজারে ডব্লিউটিআই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ব্যারেল প্রতি বিক্রি হয়েছে ১৪ শতাংশ কমে ১৫.৬৫ ডলারে। ১৯৯৯ সালের পর তেলের দর এতো নিচে আর নামেনি। তবে বিনিয়োগকারীরা জুন মাস নাগাদ তেলের দাম আবার উঠতে পারে বলে আশা করছে। করোনার কারণে চাহিদা একেবারে কমে যাওয়ায় তেলের বাজার বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়েছে। আমেরিকার রিজার্ভারগুলো নতুন উত্তোলিত তেল রাখার জায়গা পাচ্ছে না। ফলে দাম আরও কমে যাচ্ছে। মার্চ থেকে আমেরিকার রিজার্ভারগুলোতে  তেল রিজার্ভের পরিমাণ ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে এগুলোতে নতুন করে তেল রাখা যাবে না।

অবশ্য ইউরোপসহ বাকি বিশ্বের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম এখনো ২৫ ডলারের বেশি। সোমবার এর দর ০.৮ শতাংশ কমে ২৭.৮৭ ডলার প্রতি ব্যারেলে নেমে আসে।

সর্বশেষ খবর