ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইনিন প্রয়োগ নিয়ে মাতামাতির পর কভিড-১৯ এর চিকিৎসায় নতুন প্রেসক্রিপশন নিয়ে হাজির হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জীবাণুনাশকের ইঞ্জেকশন দিয়ে করোনাভাইরাস ধ্বংস করা যায় কি না- তা নিয়ে গবেষণা শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প বলেছেন, শরীরে জীবাণুনাশক অথবা অতিবেগুনী রশ্মির প্রবেশকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার উপায় হিসেবে নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। আর এই উপায় বাতলে দিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। এসব পরামর্শের কথা জানার পর চিকিৎসা জগতের লোকজনের চোখ কপালে উঠেছে। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাদের অনেকেই। চিকিৎসকরা বলেছেন, এটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা এবং মেডিকেল শাস্ত্র কখনই এ ধরনের পরামর্শ সমর্থন করে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, শরীরে জাবাণুনাশক ঢুকলে বিষক্রিয়ায় মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। এমন কী শরীরের বাইরের অংশও অতিমাত্রায় জীবাণুনাশকের সংস্পর্শে এলে তা চামড়া, চোখ, এমন কী শ্বাসযন্ত্রের জন্য বিপদ তৈরি করতে পারে। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে করোনা টাস্কফোর্সের এক ব্রিফিংয়ে সরকারি একজন কর্মকর্তা একটি গবেষণার ফলাফল হাজির করেন। তিনি দাবি করেন, তাদের ঐ গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে সূর্যের আলো এবং তাপে করোনাভাইরাস দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস বিষয়ক রেসপন্স টিমের সমন্বয়কারী ড. ডেবরা ব্রিক্সের দিকে তাকিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘সুতরাং আমরা যদি দেহকে আলট্রা-ভায়োলেট বা অন্য কোনো শক্তিশালী রশ্মির নিচে রাখি - তাহলে কি হয় আপনারা তা পরীক্ষা করে দেখুন।’ ঐ আলোক রশ্মি চামড়ার ভিতর দিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে রোগীর শরীরের ভিতর ঢুকিয়ে তার ফল কী হয়, তাও আপনারা দেখুন। ‘এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শরীরে জীবাণুনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেন। এরপর নিজের মাথার দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চিকিৎসক নই। কিন্তু আমি এমন একজন মানুষ যার যথেষ্ট ভালো জ্ঞান আছে...আপনারা বুঝতে পারছেন আমি কী বলছি।’ ড. ব্রিক্সের দিকে তাকিয়ে এরপর তিনি বলেন, তাপ এবং আলো প্রয়োগ করে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কি না। ড. ব্রিকস উত্তর দেন, তিনি জানেন না। তিনি বলেন, ‘জ্বর হলে, শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু বাইওে থেকে তাপ এবং আলো প্রয়োগ করে চিকিৎসার কথা আমি জানি না।’চিকিৎসকরা কী বলছেন : চিকিৎসকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরামর্শ শুনলে মানুষের জীবন চলে যেতে পারে। পালমোনোলজিস্ট ড. ভিন গুপ্তা বিবিসিকে বলেছেন, ‘শরীরে ভিতর জীবাণুনাশক ইঞ্জেক্ট করার এই ধারণা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং বিপজ্জনক।’
