সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা মহামারীর সতর্কতা গত বছরই পান ব্রিটিশ মন্ত্রীরা

প্রধানমন্ত্রী জনসন আজ কাজে ফিরছেন

করোনা মহামারীর সতর্কতা গত বছরই পান ব্রিটিশ মন্ত্রীরা

বরিস জনসন

করোনাভাইরাসের মহামারীতে যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৪৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টালমাটাল অবস্থা যুক্তরাজ্যের। গার্ডিয়ানের হাতে পাওয়া নথিতে জানা গেছে, মহামারী শুরুর আগেই বিদেশে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে নিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৬০০ পাতার ওই নথিতে দেখা গেছে, এতে কেবল একটি ভাইরাসের মহামারী নিয়েই পর্যালোচনা করা হয়নি বরং সুনির্দিষ্টভাবে করোনাভাইরাসের বিস্তারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে খুব বেশি কিছু বলা হয়নি। ওই নথিতে বলা হয়েছে, একটি নভেল (নতুন) ভাইরাসের মহামারী একই সঙ্গে প্রচ- সংক্রামক এবং মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

তবে সতর্কতা পাওয়ার পর সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটা একটা অভূতপূর্ব বৈশ্বিক মহামারী আর আমরা এটি মোকাবিলায় সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছি, সবসময়ই বৈজ্ঞানিক পরামর্শ অনুসরণ করা হয়েছে।

তবে ওই নথির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গার্ডিয়ানকে জানিয়েছে, মহামারীর হুমকির বিষয়ে যথাযথভাবে মনোনিবেশ করেনি যুক্তরাজ্য। ওই সূত্রটির দাবি, ‘সত্যিকার হতাশার বিষয় হলো পরিকল্পনা ছিলো। কিন্ত গত কয়েক বছরে জরুরি পরিকল্পনার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বৃষ্ট্রি ও বন্যার ওপর। মহামারী মোকাবিলা নিয়েও জাতীয় পরিকল্পনা ছিল যা বাস্তবায়ন উচিত ছিল। কিন্তু এটার নিয়ন্ত্রণে কে নেবে? স্থানীয় পর্যায়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব কার কাছে থাকবে? সত্যিটা হলো, কেউ এটা করেছে তা আমি নিশ্চিত নই। এদিকে, করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধে লকডাউন জারি থাকায় এবং সরকারের ঋণের চাপে মুখ থুবড়ে পড়েছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। অভূতপূর্ব ঋণের বোঝা নিয়ে এ সংকট মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, দেশটিতে মৃত্যুর হার যেমন বেশি, পরীক্ষা করার পরিমাণ এবং সুরক্ষা সরঞ্জামও কম। অর্থনৈতিকভাবেও ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাজ্য।

এদিকে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবশেষে সরকারি কাজে ফিরছেন। আজ থেকে তিনি ১০-ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরছেন বলে স্থানীয় স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে জনসনকে লন্ডনে সেন্ট থমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর থেকে বাকিংহ্যাম্পশায়ারে প্রধানমন্ত্রীর কান্ট্রিসাইড সরকারি বাসভবন চেকার্সেই বসবাস করছেন তিনি। শনিবার স্কাই নিউজ জানিয়েছে, চিকিৎসকদের পরামর্শের পর জনসন সোমবার (আজ) ডাউনিং স্ট্রিটে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করতে পারেন। এতে আরও বলা হয়, ‘শুক্রবার চেকার্সে তিনি উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানককের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি এবং তার স্বাভাবিক সময়সূচিতে ফিরে আসবেন।’ যদিও দিনদুয়েক আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছিলেন, এখনো বরিসের কাজে ফেরার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি ভালো আছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে শিগগিরই তিনি কাজে ফিরবেন।’

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন করোনায় আক্রান্ত হন। এক সপ্তাহের বেশি সময় বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়ার পর ৫ এপ্রিল লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে ভর্তি হন।

পরিস্থিতির অবনতি হলে পরদিন সন্ধ্যায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। গত ৯ এপি্রুল শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। ১২ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর