করোনার ছোবলে প্রায় গোটা বিশ্বই তছনছ। তবে কয়েকটি দেশে সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি এ মরণ ভাইরাস। তেমনই একটি দেশ হলো ভিয়েতনাম। দেশটিতে এখন পর্যন্ত কেউ করোনায় মারা যায়নি, আক্রান্তের সংখ্যাও হাতেগোনা। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার হার ৯৫ শতাংশের ওপরে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া ও সচেতনতা মেনে চলায় এমন প্রতিরোধ গড়তে পেরেছে দেশটি।
খবর অনুযায়ী, জানুয়ারির শেষে প্রতিবেশী দেশ থেকে ভিয়েতনামে একজন করোনা রোগী শনাক্ত হন। তখনই ভিয়েতনাম সরকার ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে, দূরদর্শী বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। জানুয়ারির শেষেই ভিয়েতনাম চীনের সঙ্গে ১৪০০ কিলোমিটারেরও বড় সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। দেশজুড়ে জারি করা হয় করোনা জরুরি অবস্থা। ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত। গণপরিবহনসহ অন্যান্য যাতায়াত ব্যবস্থাও বন্ধ করা হয়। সম্পূর্ণ লকডাউনে চলে যায় দেশ। সরকার যা কঠোরভাবে তদারকি করে। বাইরে বের হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। না পরলে জরিমানা। একজনের বেশি বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না। ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের বাইরে বের হওয়ায় দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। এ ছাড়া জ্বর, সর্দি হলেই ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ১০ কোটি মানুষের দেশে বিভিন্ন জায়গায় মাস্কের ‘ফ্রি বুথ’ চালু করে কর্তৃপক্ষ। যে গ্রামে বা শহরে ধরা পড়েছে করোনা, সেই অঞ্চলের সবাইকে ১৪ দিনের বেশি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। ফার্মেসিতে ওষুধ কেনার সূত্র ধরে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নিজস্ব টেস্ট কিটে ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষা করেছে দেশটি। হাসপাতালে করা হয়েছে রোবট ব্যবহার। আর এভাবেই করোনা আক্রান্ত রোগী কমিয়ে এনেছে ভিয়েতনাম। ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, করোনা মোকাবিলায় যেহেতু কোনো ওষুধ এবং টেকনোলজি কাজে লাগাতে পারবে না তাই প্রিভেনশন এবং প্রটেকশনকে তারা কাজে লাগিয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও দূতাবাসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ। তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সারাক্ষণই দূতাবাস খোলা রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কেউ কোনো খাদ্য বা অন্য সমসায় পড়লে আমরা খোঁজ রেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।