করোনা মহামারীর মধ্যেই ব্রাজিলে বেড়ে গেছে পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত অ্যামাজন বন উজাড়ের হার। দেশটির স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে, ২০১৯ সালের এপ্রিলের তুলনায় ২০২০ সালের এপ্রিলে বন উজাড়ের হার ৬৪ ভাগ বেশি। এ বছরের প্রথমার্ধে বৃক্ষ নিধনের মাধ্যমে বন উজাড়ের হার ৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে। বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট স্পেস রিসার্চের তথ্য অনুসারে, এপ্রিল মাসে ৪০৫ বর্গকিলোমিটার বন নিঃশেষ হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলে এই পরিমাণ ছিল ২৪৮ বর্গকিলোমিটার। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে উজাড় হয়েছে ১ হাজার ২০২ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল। সংরক্ষণ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে খুব অল্পসংখ্যক সরকারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে অ্যামাজনে।
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে থাকা অক্সিজেনের ২০ শতাংশেরই উৎপত্তি অ্যামাজনে। গবেষকদের মতে, এই বন প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। সে কারণে একে ডাকা হয়ে থাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ধীর করতে অ্যামাজনের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। বিশ্বের দীর্ঘতম এ জঙ্গলটির আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তনের প্রায় অর্ধেক। ব্রাজিলের ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো গত বছর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বন উজাড় বেড়েছে। তার নীতির কারণে অ্যামাজন উজাড় হচ্ছে বলে দাবি করছেন সমালোচকরা। তাদের মতে, ভ্রান্ত নীতি ও বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথার কারণেই অবৈধ কর্মকান্ডে উৎসাহ জোগাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট বলসোনারো এসব অভিযোগ পাত্তা দিচ্ছেন না। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে তিনি অ্যামাজন অঞ্চলে সেনা মোতায়েনের অনুমতি দিয়েছেন। তখন থেকে সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি চলছে। সেনা মোতায়েনের কথা বলা হলেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ সেনা মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি।