বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সীমানা নিয়ে তুঙ্গে নেপাল-ভারত দ্বন্দ্ব

সীমানা নিয়ে তুঙ্গে নেপাল-ভারত দ্বন্দ্ব

গত ৮ মার্চ উত্তরাখন্ডের পিথাউরাগড়-লিপুলেখের মধ্যে একটি লিংক রোডের উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার পর থেকেই বিবাদের শুরু। নেপালের দাবি, ওই ভূখন্ড তাদের। সড়ক উদ্বোধনের সময় কাঠমান্ডুতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে নিজেদের আপত্তির বিষয়টি উল্লেখ করে একটি কূটনৈতিক পত্র দেয় নেপাল সরকার। কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই ভূখন্ড কোনো দিনই নেপালের ছিল না। তাই সেখানে রাস্তা নির্মাণের অধিকার ভারতের রয়েছে।

এবার দুই দেশের বিতর্কিত কালাপানি, লিপুলেখ ও লিমপিয়াধুরা অঞ্চলকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করল কাঠমান্ডু। মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকের পর নেপাল সরকারের মুখপাত্র ও অর্থমন্ত্রী যুবরাজ খাটিওয়াদা জানিয়েছেন শিগগিরই নতুন এই মানচিত্র কার্যকর হবে।

উল্লেখ্য, নেপাল ও ভারতের মধ্যে ১৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি খোলা সীমান্ত রয়েছে। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গার অধিকার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। কালাপানি, লিপুলেখ ও লিমপিয়াধুরা নিয়ে ভারত ও নেপালের দ্বন্দ্ব পুরনো। ভারতের চিফ অব আর্মি স্টাফ মনোজ নারাভানে মন্তব্য করেছিলেন, লিপুলেখের লিংক রোড নিয়ে নেপাল সরকারের আপত্তির কারণ অন্য। এক্ষেত্রে অন্য কেউ কলকাঠি নাড়াচ্ছে। গত বছর ভারতের প্রকাশিত নতুন মানচিত্রে কালাপানি ও লিপুলেখ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এবার নেপাল এই অংশগুলো নিজের বলে মানচিত্রে প্রকাশ করল। ফলে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে।

এর মধ্যে এই দ্বন্দ্বকে গতকাল নতুন করে উসকে দিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি। নতুন ভূখ-কে নিজ দেশের মানচিত্রে যুক্ত করার পর ভারতকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করেছেন তিনি। দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ভারত থেকে আসা ভাইরাস চীনা এবং ইতালীয় ভাইরাসের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী। একই সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে নেপালে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এই প্রধানমন্ত্রী। পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে অলি বলেন, যারা অবৈধপথে ভারত থেকে নেপালে আসছেন, তারাই আমাদের দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যথাযথ পরীক্ষা ছাড়া অবৈধপথে লোকজনকে ভারত থেকে দেশে আনার জন্য স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় নেতা দায়ী।

উল্লেখ্য, মানস সরোবর পর্যন্ত তীর্থযাত্রা আরও সুগম করতে উত্তরাখ- থেকে লিপুলেখ পাস পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার লম্বা ভারতের তৈরি নয়া সড়ক নিয়ে ক্ষুব্ধ নেপাল। ওই সড়ক দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত বলে আগেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কাঠমান্ডু। এবার পরিস্থিতি আরও জটিল করে কয়েকদিন আগে ভারত-নেপাল সীমান্তে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করার কথা জানিয়েছিলেন প্রদীপ গিয়াওয়ালি। তার দাবি, নেপালের জমিতে সড়ক তৈরি করে ভারত দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি লঙ্ঘন করছে। ১৮১৬ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও নেপালের তৎকালীন রাজার মধ্যে স্বাক্ষরিত সুগাউলি চুক্তিতে সাফ বলা হয়েছে মহাকালি নদীর পূর্বের অংশ নেপালের। ১৯৮৮ সালের বৈঠকেও ভারত স্থায়ী সীমান্ত মেনে চলতে রাজি হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর