শনিবার, ৩০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ফেসবুক, টুইটারের স্বাধীনতা হরণের আদেশ দিলেন ট্রাম্প

ফেসবুক, টুইটারের স্বাধীনতা হরণের আদেশ দিলেন ট্রাম্প

এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশেষ আইনি সুরক্ষা প্রত্যাহারের উদ্যোগ শুরু করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটার, ফেসবুকের মতো কোম্পানি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে চ্যালেঞ্জের পথে এগোচ্ছে।

এই আদেশের ফলে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তাদের প্ল্যাটফর্মে যেভাবে তদারকি করে, তার বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ করে দেবে বলে জানিয়েছে বিবিসি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই আদেশে সই করেন ট্রাম্প। সই করার আগে তিনি বলেন, আমরা এগুলো নিয়ে বিরক্ত  হয়েছি। এর আগে নিজের এজেন্ডাকে সমর্থন করে না এমন সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সই করার সময় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো ‘অবারিত ক্ষমতা’ ভোগ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন। টুইটারের সঙ্গে বিবাদের পর হুমকি অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ‘শায়েস্তা’ করতে সত্যিই পদক্ষেপ নিলেন ট্রাম্প। সরাসরি টেক কোম্পানিগুলোর স্বাধীনতা খর্ব করতে না পারলেও এমন কিছু কোম্পানির বিশেষ রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করতে ট্রাম্পের এই উদ্যোগ। ফলে ফেডারেল স্তরে ফেসবুক ও টুইটারের মতো কোম্পানির দায়বদ্ধতা সীমিত রাখার লক্ষ্যে এতদিন যে বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা ছিল, তা লোপ পেতে চলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মঞ্চে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব বক্তব্য তুলে ধরলে কোম্পানিকে তার দায় বহন করতে হতো না। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে সহজেই মামলা করা যাবে। গত মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন টুইটের ফ্যাক্ট চেক লিঙ্ক দেওয়া শুরু করে টুইটার। ট্রাম্প যে টুইট করেছেন, তা কতটুকু সত্য সেটি যাচাই করার জন্য তার টুইটের নিচে ‘প্রকৃত খবর যাচাই করুন’ এমন ফ্যাক্ট চেকিং ট্যাগ ব্যবহার করে টুইটার। আর এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর ব্যাপক ক্ষেপে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। টুইটারের বিরুদ্ধে তিনি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করারও অভিযোগ তুলেছেন। টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘টুইটার বাক স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি এটা হতে দেব না।’ তিনি বলেন, রিপাবলিকানরা মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়া রক্ষণশীলদের কণ্ঠ একেবারে স্তব্ধ করে দেয়। যেকোনো কিছু ঘটার আগেই আমরা তাদের (সোশ্যাল মিডিয়া) নিয়ন্ত্রণ করব বা বন্ধ করে দেব। এদিকে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের সমালোচনা করেছে টুইটার, গুগল ও ফেসবুক। টুইটার বলেছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে উৎসারিত কমিউনিকেশন্স ডিসেন্সি অ্যাক্টের ধারা ২৩০ মার্কিন উদ্ভাবন ও বাকস্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিয়ে আসছে। ধারা ২৩০ এর পরিবর্তন মার্কিন অর্থনীতি ও ইন্টারনেট স্বাধীনতায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে জানিয়েছে গুগল। টুইটার কোম্পানির প্রধান জ্যাক ডোরসি ট্রাম্পের সঙ্গে সর্বশেষ সংঘাতের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, টুইটার তথ্য যাচাই করে মোটেই সত্য-মিথ্যের একচেটিয়া বিচারক হওয়ার চেষ্টা করে না। পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উঠে এলে বিতর্কিত তথ্য তুলে ধরে ব্যবহারকারীদের হাতেই তার ভিত্তিতে বিচার করার সুযোগ দেওয়া হয়। ট্রাম্প বলেছেন, প্রায় আট কোটি অনুগামী থাকা সত্ত্বেও চাইলেই তিনি অনায়াসে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে পারেন। কিন্তু ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়া খবর এড়িয়ে চলতে তিনি এই মঞ্চ ব্যবহার করছেন।

সর্বশেষ খবর