মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সীমান্তে অত্যাধুনিক অস্ত্র মজুদ চীন-ভারতের

উদ্বেগে দক্ষিণ এশিয়া

সীমান্তে অত্যাধুনিক অস্ত্র মজুদ চীন-ভারতের

সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের অবস্থান

ভারত-চীনের যুদ্ধ কি তবে অনিবার্য? দুই দেশের গতিপ্রকৃতি দেখে এই শঙ্কা বিশ্লেষকদের। সূত্র বলছে, লাদাখের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র মজুদ করছে ড্রাগনের দেশ চীন। তাদের অস্ত্রসম্ভারে রয়েছে হালকা ওজনের ট্যাংক থেকে ভারী মাল বহনকারী ড্রোন। পিছিয়ে নেই ভারতও। কাশ্মীর থেকে সেনা সরিয়ে লাদাখে চীনা সীমান্ত বরাবর তাদের মোতায়েন করা হচ্ছে বলে খবর। তবে এসব নাকি রুটিনমাফিকই হচ্ছে বলে দুই দেশের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। গত ২৫ দিন ধরে লাদাখে মুখোমুখি ভারত-চীন সেনাবাহিনী।

এদিকে দুই দেশের সাম্প্রতিক কর্মকা- নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দি ইকোনমিস্ট। সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ভারত-চীন সীমান্তে সামরিক টেনশন চরমে। চলতি মাসের গোড়ায় লাদাখের পাংগং লেকে দুই দেশের সৈন্যরা মারামারি করে হাসপাতালে ভর্তি হলো, তখন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারাভান বললেন, এ আর এমন কী! ঐতিহাসিকভাবে দুই দেশের সৈন্যরা এমন কত করেছে। তার কথায়, সাড়ে তিন হাজার দীর্ঘ সীমান্তে এরকম ঘটনা ‘অস্থায়ী এবং স্বল্পমেয়াদি।’ দি ইকোনমিস্ট অবশ্য বলেছে, তখনকার মতো উভয় পক্ষই পরস্পরকে ‘নিবৃত্ত’ করেছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেই ভারতের সেনাপ্রধানকে নিকটবর্তী লেহ এলাকায় দেখা যায়। এতেই বোঝা যায়, গুরুতর কিছু একটা ঘটেছে। ভারতীয় মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, চীনা সৈন্যরা বিতর্কিত সীমান্তের তিন থেকে চার কিমি পর্যন্ত ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। তারা বহু ভারতীয় চৌকি ও সেতু গুঁড়িয়ে দেয়। চৌকি খুঁড়েছে। তাঁবু ফেলেছে।

নিউইয়র্ক টাইমস এক রিপোর্টে বলেছে, চীন গোটা এশিয়াজুড়ে তার ক্ষমতা প্রদর্শন করে চলছে। এখন বিতর্কিত হিমালয় এলাকার ইন্দোচীন সীমান্তেও শক্তির মহড়া দেখানোর ফলে ভারত নিজকে বেষ্টনীর মধ্যে পড়ে গেছে বলে মনে করছে। উভয় পক্ষ মুখে বলছে, তারা যুদ্ধ চায় না। তবে উভয়ে সীমান্তে হাজার হাজার সৈন্যের সমাবেশ ঘটিয়েছে। ৩০ মে জেফরি জেটেলম্যান এবং স্টিভেন লি মেয়ার্স দিল্লি ডেটলাইনে লিখেছেন, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সৈন্যরা একটা মল্লযুদ্ধ করেছেন মে মাসের গোড়ায়। ১৪ হাজার ফুট উঁচুতে সেটা ভয়ঙ্কর কিছু ছিল না। কিন্তু ভয়ঙ্করটা পরে ঘটেছে। এর কয়েকদিন পরে একাধিক সীমান্ত পথে চীনা সৈন্যরা ভারতের ভিতরে ঢুকে ভারতের সৈন্যদের রুখে দেয়। ১ হাজার মাইলের বেশি ভিতরে ঢুকে চীনা সৈন্যরা।

নিউইয়র্ক টাইমসও অবশ্য বলছে, দুই দেশ যুদ্ধে যাবে, সেটা কেউ ভাবেন না। তবে ২০১৭ সালের পরে এই প্রথম বিরোধে ফিরে এলো দুই দেশ। আর সেটা মিলিয়ে যাচ্ছে না। ভারতের শঙ্কা, চীনের এই পদক্ষেপ মোদি সরকারকে চাপে ফেলছে এবং চাপটা দিতেই এই চীনে অভিযান। এর আগে চীন দক্ষিণ চীন সমুদ্রে ভিয়েতনামি মাছের ট্রলার ডুবিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া একটি মালয়েশীয় অফশোর অয়েল রিগে ঝামেলা করেছে। তাইওয়ান এবং হংকংকে টাইট দিয়েছে। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ক্ষমতায় আসার পরে এটা উত্তেজনার চতুর্থ মহড়া। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত এসব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মোদি বেশ সুর উঁচুতে নিয়ে মন্তব্য করেন। কিন্তু করোনাকালে তাকে নীরব থাকতে দেখা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর