মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে হাঁটু দিয়ে চেপে শ্বেতাঙ্গ পুলিশদের শ্বাসরোধ করে খুনের ঘটনায় এখন জ্বলছে গোটা আমেরিকা। সেই বীভৎস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদের আগুন আমেরিকা থেকে ছড়িয়ে পড়ছে অন্য দেশেও। কিন্তু গণতন্ত্রের এই আন্দোলনে তোয়াক্কা নেই মার্কিন পুলিশের। বেপরোয়া তাদের নৃশংস আচরণ। নিউইয়র্কের রাস্তায় বছর পঁচাত্তরের এক ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে মারধর করতে দেখা গেল পুলিশকে। রক্তাক্ত ওই ব্যক্তির ওপর এমন হামলার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই অবশ্য ২ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকান্ডের জেরে ফের মার্কিন মুলুকে উসকে উঠেছে বর্ণবিদ্বেষবিরোধী বিদ্রোহ। পুলিশের অত্যাচার যত বাড়ছে, বিদ্রোহের আঁচ ছড়াচ্ছে আরও বেশি।
এমনই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ঘটে গেল আরেকটা ঘটনা। নিউইয়র্কের বাফেলো শহরে ওইদিন বিকাল নাগাদ বছর পঁচাত্তরের এক বৃদ্ধ বেরিয়েছিলেন হাঁটতে। এই শহরেও রাস্তাঘাটে বিক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়েছে। তবে সেই বিক্ষোভে সেভাবে শামিল হননি বৃদ্ধ। তিনি নিজের মতোই ফুটপাথ ধরে হাঁটছিলেন। উল্টো দিক থেকে কয়েকজন পুলিশ কর্মী এগিয়ে আসায় বৃদ্ধ তাদের নিজের অবস্থান বোঝাতে যান। কিন্তু কোনো কথা না শুনে সোজা প্রহারের পথে হাঁটে পুলিশকর্মীরা। রাস্তায় ফেলে চলে ব্যাপক মারধর। বৃদ্ধের কান, কপাল থেকে রক্ত বের হতে থাকে। তিনি সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
বৃদ্ধকে অজ্ঞান হতে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায় পুলিশকর্মীরাও। কিন্তু তখন নিজেদের পিঠ বাঁচানোর দায়ে কোনো ক্রমে অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেওয়ার পর অকুস্থল থেকে চম্পট দেয়। অ্যাম্বুলেন্স বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আপাতত তিনি স্থিতিশীল। তবে তার ওপর পুলিশের এমন নৃশংস আক্রমণের ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসনের আর হাত গুটিয়ে বসে থাকার উপায় ছিল না। বাফেলো শহরের মেয়র বায়রন ব্রাউনের কথায়, ‘ভিডিওটি দেখে আমি চমকে উঠেছি। পুলিশের সঙ্গে এতবার আমি নিজে কথা বলার পরও এমন ঘটনা আমাকে খুবই আঘাত দিয়েছে।’ নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোও তীব্র নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন। ঘটনার জেরে বাফেলোর রাস্তায় কর্তব্যরত দুই পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।