সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আলোচনার টেবিলে চীন-ভারত

রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আলোচনার টেবিলে চীন-ভারত

সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আলোচনার টেবিলে বসছে চীন ও ভারত। আগামী ২২ জুন এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ-ও এতে অংশ নেবেন। আপাতত করোনা মহামারী মোকাবিলার কৌশল নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই আসন্ন বৈঠকে একটি আস্থাবর্ধক বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা দিল্লির থাকবে। এমনটাই জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

বেশ কিছু দিন ধরেই রাশিয়ার পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হচ্ছিল, তারা চায় চীন-ভারত উত্তেজনা কমুক। দিল্লিও বিষয়টি নিয়ে মস্কোর সঙ্গে কথা বলেছে। ফলে সরাসরি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা না নিলেও রাশিয়া যে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিচ্ছে, তা এ বৈঠকের উদ্যোগেই স্পষ্ট। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, দিল্লি যাতে ওয়াশিংটনের দিকে বেশি ঝুঁকে না পড়ে, সেটাই মস্কোর অগ্রাধিকার। এদিকে চীনের সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণে। লাদাখে চীনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাদের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। সেনাবাহিনীর স্তরে তা মেটানোরও চেষ্টা চলছে। গত ৫ জুন কোর কমান্ডার স্তরে বৈঠক হয়েছে। তারপর এই প্রথম বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের সেনাপ্রধান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরন্তর আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য মিটিয়ে ফেলা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।’ ভারতীয় সেনাপ্রধান এমন মন্তব্য করলেও আগের বৈঠকে চীনা বাহিনী লাদাখ নিয়ে অনড় মনোভাব দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের সেনা সূত্র। মঙ্গলবার মেজর জেনারেল পর্যায়ে বৈঠক হয়। শুক্রবারই দুই সেনার মধ্যে স্থানীয় স্তরে বৈঠক হয়েছে। সেখানে চীন বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা এখনই প্যাংগং লেকের উত্তর তীরে ফিঙ্গার-ফোর সংলগ্ন এলাকা থেকে সরতে নারাজ। পাহাড়ের যে অংশগুলো প্যাংগং লেকের মধ্যে ঢুকে রয়েছে, সেগুলোকেই ফিঙ্গার বলা হয়। ফিঙ্গার-ফোরের কাছে চীন অন্তত ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে রেখেছে বলে দাবি ভারতের সেনা সূত্রের।

৫ মে থেকে চীন ওই এলাকা দখল করে বসে থাকায় ফিঙ্গার-ফোর থেকে ফিঙ্গার-এইট পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীর নজরদারি বন্ধ হয়ে গেছে। উল্টো দিকে চীনা বাহিনী সেখানে পাথরের বাঙ্কার এবং কাঁচা ঘর তৈরি করে ফেলেছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। মোদি সরকারকে নিশানা করে কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল বলেন, ‘চীন আমাদের এলাকা দখল করে ফেলেছে। সে সময় মনে রাখা দরকার, কোন প্রধানমন্ত্রী কত বার চীন সফরে গিয়েছেন। নেহরু, রাজীব গান্ধী, নরসিংহ রাও, বাজপেয়ি একবার করে বেইজিং গিয়েছেন। মনমোহন সিং গিয়েছেন দুইবার। বাকি প্রধানমন্ত্রীরা কেউ সেখানে যাননি। আর নরেন্দ্র মোদি পাঁচ বার চীনে গেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও চার বার সেখানে গিয়েছেন তিনি।’

সর্বশেষ খবর