শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কোথাও বাড়ছে সংক্রমণ কোথাও খুলছে সব

কোথাও বাড়ছে সংক্রমণ কোথাও খুলছে সব

ইউরোপের দেশ সুইডেন। লোক সংখ্যা এক কোটির কিছু বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে মাস দুয়েক আগে যখন কভিড-১৯ মৃত্যুপুরী তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিষেধ সতর্কতাকে পাশে রেখে দিব্যি সব কিছু খোলা রেখেছিল। ধারণা ছিল লকডাউন না দিয়ে মানুষের মধ্যে মেলামেশার মাধ্যমে সবার মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এতে খুব অল্প সংখ্যক নাগরিকের মধ্যেই অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়েছে। যার হার মাত্র ৬.১। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৫৬ হাজার ৪৩ জন আর মারা গেছে পাঁচ হাজার ৫৩ জন। অপর দিকে জার্মানি প্রথম থেকেই লকডাউনে গিয়েও মারা গেছে প্রায় নয় হাজার আর আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজারের বেশি। দেশটিতে আবার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে তাই নতুন করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে ৮ হাজারের  বেশি মানুষকে। আবার চরম সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ইতালি, স্পেন তাদের সবকিছু খুলে দিয়েছে। তবে জার্মানিতে কড়াকড়ি চলছেই। জার্মানির নিউকলিনের মেয়র জানিয়েছেন, তারা নতুন করে এসব সংক্রমণের উৎস খোঁজার চেষ্টা করছেন। এখনো পুরোপুরি তারা নিশ্চিত নন তবে মহামারী এখনো রয়ে গেছে বলে মনে করেন মেয়র মার্টিন হাইকেল।

সুইডেন মহামারী চলাকালীন স্কুল কলেজ, রেস্তোরাঁ, বার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সব খোলা রেখেছিল হার্ড ইমিউনিটির আশায়। কিন্তু এক গবেষণায় দেখা গেছে  দেশটিতে মাত্র ৬.১ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি গঠিত হয়েছে। ফলে এভাবে আর হার্ড ইমিউনিটি অর্জন সম্ভব না বলেই মনে করা হচ্ছে।

এদিকে স্প্যানিশ সরকার করোনা পরবর্তী সময়ের জন্য ৪.৩ বিলিয়ন ইউরো ঘোষণা করেছে। এই অর্থ ব্যয় করা হবে দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে।  দেশটির জিডিপির ১২ শতাংশই আসে এ খাত থেকে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজ ঘোষণা করেছেন ২৮ পয়েন্টের নীতিমালা। এটি স্পেনের মানুষের উদ্যম বৃদ্ধিকে সামনে রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেশটির ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য। পর্যটকদের করোনা ঝুঁকি থেকে দূরে রাখতেই একটি বিশাল অঙ্ক ঘোষণা করেছে স্পেন।

ইউরোপের আরেক দেশ ডেনমার্ক জানিয়েছে, তারা নাগরিকদের ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে ভ্রমণের অনুমতি দেবে। তবে যেখানে এখনো করোনা প্রাদুর্ভাব রয়েছে সেসব অঞ্চল নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। ইউরোপের বাইরেও খুলে যাচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চল। নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও জানিয়েছেন, আগামী সোমবার থেকেই খুলে যাচ্ছে সেলুন,  রেস্তোরাঁ।

কিন্তু ইউরোপ যখন সব কিছু খুলতে চাচ্ছে তখন দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা ও সংক্রমণ। ব্রাজিলে একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ১২৬৯ জন। এ নিয়ে  দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭,৮৬৯ জনে। আবার ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এদিকে চীনে একদিনে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২১ জন। ফলে সংক্রমণ থেমে যাওয়ার পর দেশটিতে  মোট আক্রান্ত হলো ১৬০ জন। তবে চীনের দাবি নতুন এ সংক্রমণ তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে  পেরেছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৮৬ লাখ ১০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪ লাখ ৫৭ হাজার।

সর্বশেষ খবর