শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
আর্থিক সহায়তা

মতপার্থক্য কাটাতে আবার উদ্যোগী ইইউ

ট্রাম্পের অ্যামেরিকা ও শি জিন পিংয়ের চীনের রেষারেষির মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। করোনা সংকটের অর্থনৈতিক কুপ্রভাব রুখতে ইইউ শীর্ষ নেতারা ঐকমত্যের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

করোনা সংকটের শুরুতে ইউরোপের দেশগুলো দিশাহারা হয়ে নিজস্ব সীমানা বন্ধ করে নিজস্ব পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সংকট সামলাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় কোনো ভূমিকা ছিল না বললেই চলে। তারপর ইইউ এই সংকটের ফলে জর্জরিত অর্থনীতি সামাল দেওয়ার উদ্যোগ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত জার্মানি ও ফ্রান্সের শীর্ষ নেতারা বিভেদ ভুলে ইইউর ছত্রছায়ায় বিশাল অঙ্কের এক অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে সেই উদ্যোগকে ঘিরে এখনো সম্পূর্ণ ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। গতকাল ইইউ শীর্ষ নেতাদের ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে মতপার্থক্য দূর করে এ ক্ষেত্রে ঐকমত্যের চেষ্টা চালানো হয়। তবে এ দিনই চূড়ান্ত ফলাফলের আশা করা হচ্ছে না। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, করোনা সংকটের জের ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে মারাত্মক মন্দার মুখে পড়েছে। এই সংকট থেকে বের হতে জরুরি ভিত্তিতে ইইউ বাজেট ও পুনর্গঠন তহবিল সম্পর্কে ঐকমত্যের প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার জার্মান সংসদে দেওয়া এক ভাষণে ম্যার্কেল আরও বলেন, ইউরোপীয় প্রকল্প কতটা ভঙ্গুর, এই মহামারী তা দেখিয়ে দিচ্ছে। তিনি আত্মসমালোচনার সুরে বলেন, ইউরোপীয় উদ্যোগের ফলে জাতীয় স্তরে প্রাথমিক পদক্ষেপ সেই দুর্বলতা তুলে ধরেছে। করোনা সংকটের অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে ইইউ বাজার থেকে ৭৫ হাজার কোটি ইউরো ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব রেখেছে। বিশেষ করে ইতালি ও স্পেনের মতো দেশের বাইরের সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ইউরোপীয় কমিশন এর দুই-তৃতীয়াংশ অনুদান ও এক তৃতীয়াংশ ঋণ হিসেবে বণ্টন করার প্রস্তাব রেখেছে। সেই সঙ্গে ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি ইইউ বাজেটের অঙ্ক বাড়িয়ে এক লাখ ১০ হাজার কোটি ইউরো করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এ বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে জার্মানি সুর নরম করলেও অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডসের মতো কিছু দেশ ঋণের বোঝা ভাগ করে নেওয়ার ঘোর বিরোধী। তবে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে বলেছেন, শেষ পর্যন্ত আপসের প্রয়োজন হবে। সরাসরি আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে দুর্বল দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অঙ্গীকার করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। মতপার্থক্য সত্ত্বেও ইইউ শীর্ষ নেতাদের ওপর দ্রুত ঐকমত্য অর্জনের জন্য চাপ বাড়ছে।

সর্বশেষ খবর