গালওয়ান উপত্যকায় চীনের হাতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পর যুদ্ধনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) মোতায়েন থাকা কমান্ডারদের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চীন সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় বন্দুক ব্যবহারে আর কোনো বাধা নেই। সামরিক বাহিনীর দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে গতকাল এ খবর জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। খবরে বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন পড়লে হাতে যা আছে তার সবই ব্যবহার করতে পারবে জওয়ানরা। এর আগে সর্বদলীয় সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, সীমান্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জওয়ানদের পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এটি চীনকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, নিয়ম বদল হওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণরেখায় আর ভারতীয় কমান্ডারদের হাত বাঁধা থাকবে না। তারা যেটা ঠিক মনে করবেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। তিনি বলেন, কিছুদিন ধরেই নিয়ম বদল করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। তবে গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরই বিষয়টিতে সম্মতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সর্বদলীয় বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, ‘লাদাখে চীনকে চরম শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।’ যদিও তার এমন দাবি নিয়ে নিজ দেশেই প্রশ্ন উঠেছে। গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সৈন্যদের মৃত্যুর খবরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন কেন তাদের সৈন্যদের নিরস্ত্র অবস্থায় ওই অঞ্চলে পাঠানো হলো। তখন সরকার জানিয়েছে সৈন্যদের কাছে অস্ত্র থাকলেও অস্ত্র না ব্যবহার করার শর্তে চীনের সঙ্গে চুক্তি থাকার কারণে তারা সেগুলো ব্যবহার করেনি। ১৯৯৬ ও ২০০৫ সালের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দুই কিলোমিটারের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। সেই অনুযায়ী এতদিন নিয়ম মানতো ভারত। কিন্তু চীনের হামলার মুখে এবার যুদ্ধনীতিতে পরবির্তন আনল দিল্লি।
