মঙ্গলবার, ২৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

যেভাবে হত্যা করা হয় ভারতীয় সেনাদের

গত ১৫ জুন চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়। তাদের কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা এতদিন জানা না গেলেও এবার প্রকাশ্যে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, গালওয়ানে সংঘর্ষে নিহত ভারতীয় সেনাদের মরদেহে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত ছিল, এ ছাড়াও তাদের বেশিরভাগের শরীরের একাধিক হাড় ভাঙা অবস্থায় ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লে-র সোনাম নারবু হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘নিহত সেনাদের মরদেহগুলো দেখে মনে হচ্ছিল পূর্ণ শক্তি দিয়ে তারা প্রতিপক্ষ চীনা বাহিনীর মোকাবিলা করেছেন। ভারতীয় বাহিনী একাধিক চীনা সেনাকে মেরেছে বলেও মনে হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভারতীয় সেনাদের আঘাত করা হয়েছিল। অনেকেরই দেহের বিভিন্ন অঙ্গের হাড় ভেঙে গিয়েছিল।’

সংঘর্ষে জখম সেনাদের লে-র হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের কথোপকথন শুনে হাসপাতাল কর্মীদের মনে হয়েছে, ভারতীয় সৈন্যরা তাদের সর্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করেছিল। কর্নেল বাবুকে মারার পর সেই তীব্রতা আরও বাড়ে। সূত্র জানিয়েছে, ১৮ জখম ভারতীয় সেনাকে লে-তে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। এ ছাড়া ৪০ জনের বেশি জওয়ানকে দেশের বিভিন্ন সেনা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে, ১৫ জুন রাতের ইন্দো-চীন সেনা সংঘর্ষে ভারতীয় কতজন জওয়ান জখম হয়েছিলেন সে বিষয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। গালওয়ান উপত্যকা লে থেকে ২৩০ কিমি দূরে অবস্থিত। সংঘর্ষের পরই লে থেকে লাদাখে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়। একই সঙ্গে সমর সম্ভারও পাঠানো হয়। গালওয়ানে নিয়ন্ত্রণরেখায় বাড়তি ভারতীয় সেনা মজুদ করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ হামলা করলে রণক্ষেত্রেই সেনাবাহিনীকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেজন্য বাহিনীকে বলপ্রয়োগের পূর্ণ কর্তৃত্ব ও স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।  চীন সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় রবিবার সেনা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

কার্গিল যুদ্ধের নায়ক ও মহাবীর চক্র সম্মানে ভূষিত অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সোনাম ওয়াংচুকের কথায়, ‘সংঘর্ষে আমাদের ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ওদের দ্বিগুণ সেনা মারা গেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে ওখানে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার ছেলেদের পাঠানো হচ্ছে। এবার মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে আমরা সুবিধাজনক জায়গায় থাকব।’ ভারত দাবি করেছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষে ৪০ জনের বেশি চীনা সেনা নিহত হয়েছে। যদিও এ প্রসঙ্গে কিছু জানায়নি বেইজিং। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সোনাম ওয়াংচুক বলেন, ‘১৯৬২ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল। ভারতীয় সেনার কুমাউং কোম্পানির সদস্যরা হাজারের বেশি সেনাকে মেরেছিল। আমাদের পক্ষ থেকে মারা যায় ১৩০ জন সেনাকর্মী। তখনো ওরা নীরব ছিল। এবারও তাই হচ্ছে।’ সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সর্বশেষ খবর