শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

লাদাখ নিয়ে আরও চড়া সুর ভারত-চীনের

লাদাখ নিয়ে আরও চড়া সুর ভারত-চীনের

লাদাখ নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে কোনোভাবেই উত্তেজনা কমছে না। এবার ওই এলাকা থেকে সেনা সরানো নিয়ে আলোচনার মধ্যেই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ করেছে। দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সরাসরি অভিযোগ করেছেন, ‘চীনই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা এবং সীমান্ত চুক্তি ভেঙেছে। চলতি মাসের শুরু থেকে চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিপুল সৈন্য সমাবেশ করেছে। তারা কয়েক বছর ধরেই স্থিতাবস্থা ভাঙার চেষ্টা করছে। চীনের সেনার ব্যবহার পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলেছে। গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে চীনের সুর বদল তার একটা উদাহরণ।’ পাল্টা অভিযোগ করেছে চীনও। ভারতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত সুং ওয়েংদুং সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘গালওয়ানে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের দায় কোনোভাবেই চীনের নয়। আমাদের আশা, ভারত এমন কোনো কাজ করবে না, যাতে সীমান্ত পরিস্থিতি জটিল হয়।’ সংঘর্ষের দায় ভারতের ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছেন সুং। চীনের অভিযোগ, ভারতই তাদের এলাকায় ঢুকে হামলা করেছে। কিন্তু অনুরাগের দাবি, ‘ভারত কখনই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়নি। ভারতের যা নির্মাণ তা নিজেদের দিকে এবং নিয়ম মেনে। চীন সেই ভূমিকা নেয়নি। তাই বারবার সংঘাত হচ্ছে। ভারত একতরফা স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করেনি। কিন্তু চীন দ্বিপক্ষীয় যাবতীয় চুক্তি, বিশেষ করে ১৯৯৩ সালের চুক্তি ভঙ্গ করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিপুল সেনা সমাবেশ করেছে এবং স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করেছে। অতীতে তারা মাঝে মাঝে এই কাজ করেছে। কিন্তু এবার তারা দুই দেশের সম্মতিতে যেসব নিয়ম চালু করা হয়েছিল, তা সবই ভেঙেছে।’ বোঝাই যাচ্ছে, বেশ কড়া বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবারই ভারত ও চীনের ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন বা ডব্লিউএমসিসির বৈঠক হয়েছে। ভিডিও বৈঠকে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি দুই দেশ। সূত্র জানাচ্ছে, সেখানেই ভারত ও চীন একে অপরকে দোষারোপ করেছে। তারপর দুই পক্ষের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, আলোচনা খুব বেশিদূর এগোয়নি। ফলে দুই পক্ষ সেনা সরানো নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানোর কথা বললেও, সেটা কবে থেকে শুরু হবে তা বলা যাচ্ছে না। লাদাখের পরিস্থিতিও যথেষ্ট উত্তেজক। ভারতের সেনাপ্রধান দুই দিন লাদাখ সফর করার পর দিল্লি ফিরেছেন। তিনি চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াতের কাছে রিপোর্ট দিয়েছেন। সেই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার পর লাদাখে সেনা মোতায়েন নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে ভারত।

লে শহরের অবস্থা আগের মতোই। সমানে যুদ্ধবিমান উড়ছে। পাক খাচ্ছে সেনা হেলিকপ্টার। লে শহর থেকে বেরোলেই পুলিশ ও সেনার অসংখ্য চেক পোস্ট। সমানে সেনার গাড়ি যাচ্ছে। সূত্র জানাচ্ছে, গালওয়ানে ভারত ও চীনের সেনা একেবারে মুখোমুখি রয়েছে। একাধিক বলয়ে সেনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এই অঞ্চলে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। চীনও সমান সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে। 

তবে লাদাখে সংঘর্ষের পর এই প্রথমবার চীনের তরফে সরকারিভাবে স্বীকার করা হলো যে, তাদের সেনাও মারা গেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা হে জিয়াংখি বলেছেন, সংঘর্ষে চীনের সেনাও মারা গেছে। কিন্তু উত্তেজনা বাড়বে বলে কতজন মারা গেছে তা বলা হচ্ছে না। সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর