স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান হার রোধ করা সম্ভব না হলে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে তা দৈনিক ১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন দেশটির সংক্রমণ-ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. এন্থনি এস ফাউসি। মঙ্গলবার ইউএস সিনেটে করোনাভাইরাস ট্রাস্ক ফোর্সের প্রভাবশালী এই সদস্য ড. ফাউসি আরও বলেছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা অপর অংশের রাজ্যগুলোও ছড়াতে বাধ্য। তাই এক্ষুনি সবার সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই। উল্লেখ্য, গত কদিন থেকেই সংক্রমণের হার বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে। সর্বশেষ সোমবার ৮ রাজ্যে বৃদ্ধির এ সংখ্যা ৪৬ হাজারের বেশি। রাজ্যগুলো হচ্ছে আলাস্কা, আরিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া, আইডাহো, ওকলাহোমা, সাউথ ক্যারলিনা এবং টেক্সাস। একক কোনোদিনে এতসংখ্যক আমেরিকানের সংক্রমিত হওয়ার রেকর্ড নেই বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান। এই সংখ্যার প্রতি ইঙ্গিত করেই ড. ফাউসি দৈনিক লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন। গত দু’সপ্তাহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগের তুলনায় সংক্রমণের হার ৮০% বেড়েছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। এ অবস্থায় দক্ষিণ-পশ্চিমের ১৬ রাজ্য থেকে লকডাউন শিথিলের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। একই কারণে করোনায় ব্যাপকভাবে আক্রান্ত আরও ৮ স্টেট থেকে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি এবং কানেকটিকাট রাজ্যে আগতদের ১৪ দিন কোরেন্টাইনে থাকার নয়া বিধি জারি করা হয়েছে মঙ্গলবার। এনিয়ে এ ধরনের বিধির আওতায় পড়া রাজ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫।
নিউজার্সি এবং কানেকটিকাট স্টেটের দুই গভর্নর ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে নিয়ে নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো বলেন, কঠিন একটি পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে আমরা করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। সে অবস্থায় যাতে কোনোভাবেই অবনতি ঘটতে না পারে সেজন্যে যতরকমের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা করব। বর্তমানে সংক্রমিত এলাকার লোকজনের অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়ার অর্থ হবে পুনরায় করোনাভাইরাসকে স্বাগত জানান। সেটি করতে চাই না। নিউইয়র্কের কোনো কর্মচারী যদি স্বেচ্ছায় উচ্চ ঝুঁকিতে পড়া রাজ্যে ২৫ জুনের পরে যেয়ে থাকেন, তাহলে তারা ফেরার পর করোনা চিকিৎসার জন্যে সবেতন ছুটি পাবেন না বলে নতুন এক নির্বাহী আদেশের উদ্ধৃতি দিয়ে ক্যুমো জানান। এ সময় ক্যুমো নিউইয়র্কের সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ছিলেন মাত্র ৮৯১ জন। মারা গেছেন ১৩ জন। সোমবার স্টেটে করোনা টেস্ট হয় মোট ৫২ হাজার ২৫ জনের। এরমধ্যে পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে ৫৯৪ জনের অর্থাৎ ১%। এসবই হচ্ছে ভয়াবহ একটি পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের নমুনা। তবে এ অবস্থায় আসতে স্টেটের সর্বস্তরের মানুষকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।