শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মিয়ানমারে খনিতে ধস ১৬০ মৃতদেহ উদ্ধার

মিয়ানমারে খনিতে  ধস ১৬০ মৃতদেহ উদ্ধার

স্বজনদের আহাজারি -এএফপি

মিয়ানমারে একটি জেড পাথরের খনিতে ভয়াবহ ধসে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত অন্তত ১৬০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধসের নিচে চাপা পড়েছেন আরও অনেকে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার প্রশাসন।

মিয়ানমারের দমকল বিভাগ জানিয়েছে, গতকাল কাচিন প্রদেশের হপাকান্তা এলাকার একটি জেড পাথরের খনিতে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। সেই সময় আচমকাই খনির বিশাল স্তূপাকার বর্জ্য একটি  লেকের ধারে ধসে পড়ে। মিয়ানমারের দমকল বিভাগের ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে, ধসের জেরে ওপর থেকে প্রচ- বেগে বিশাল কাদামাটির স্রোত নেমে আসে। তাতেই চাপা পড়েন প্রায় ২০০ শ্রমিক।

মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ‘অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে কাদার নিচে চাপা পড়ে। আরও অনেকে চাপা পড়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে।’ বিশ্বে সবুজ রঙের প্রায়-স্বচ্ছ রত্ন পাথর জেডের সবচেয়ে বড় উৎস মিয়ানমার। সেখানে উত্তোলিত জেড পাথরের বেশির ভাগই প্রতিবেশী দেশ চীনে রপ্তানি হয়। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন প্রদেশ আর হপাকান্ত জেডের খনির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু সরকারের কার্যকর তদারকি না থাকায় সেখানে প্রায়ই প্রাণঘাতী ভূমিধস ও বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মিয়ানমারে বর্ষা মৌসুম চলে। এ সময়ে হপাকান্তের সব খনিতে কাজ বন্ধ রাখার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয় না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে, যারা গরিব। বড় খনিগুলো অনুসন্ধান চালানোর পর পড়ে থাকা অবশিষ্টাংশের মধ্যে রত্ন খোঁজেন তারা। গরিব নিম্নবিত্ত মানুষ মূলত রোজগারের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। ২০১৫ সালে প্রায় একই রকম ধস নেমে মৃত্যু হয়েছিল ১০০ জনের। এবার সে দুর্ঘটনা ছাপিয়ে ইতিমধ্যে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে নিখোঁজদের খোঁজে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। দমকল বাহিনীর পক্ষ থেকে শতাধিক প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দমকল বাহিনী জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ওই খনিটি ধসে পড়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলছে বলে জানা যায়। 

পুলিশ বলছে, ওই এলাকায় বুধবার সতর্কতা জারি করা হয়। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে লোকজন এই সতর্কতা কানেই তোলেনি। সে কারণেই এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। বিশ্বের বৃহত্তম পান্না খনি মিয়ানমারে অবস্থিত। দেশটিতে প্রতি বছরই বিভিন্ন খনি থেকে মূল্যবান এই রত্ন পাওয়া যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বেশ কয়েকবার খনি ধসের ঘটনা ঘটেছে। ফলে প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ। এর আগে গত বছর একটি খনিতে দুর্ঘটনায়ও শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। বিবিসি

সর্বশেষ খবর