রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে যে কারণে কমছে করোনায় মৃত্যু

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে যে কারণে কমছে করোনায় মৃত্যু

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়লেও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। এপ্রিল এবং মে মাসের মতোই বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর হার শতকরা ৭৫ ভাগের কম। এপ্রিল-মে মাসে সেখানে দৈনিক গড়ে তিন হাজারের বেশি রোগী মারা গেছেন, আর এখন মৃত্যুর সংখ্যা সাতশর নিচে নেমে এসেছে। কেন এমন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শুরুতে করোনাভাইরাস নিয়ে সবার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে সিট না পেয়ে রোগীরা শারীরিক দুর্বলতার চেয়ে মানসিকভাবে বেশি নাজুক হয়ে পড়েন। অনেকে সিট না পেয়ে ভীত-সন্তস্ত্র হয়ে হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছেন। আর এখন সবাই করোনাকে জয় করার সংকল্প নিয়ে মনোবল দৃঢ় করেছেন। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফলমূল বেশি খাচ্ছেন। গরম পানিসহ বিভিন্ন ওষুধী পানীয় ব্যাপকভাবে পান করছেন । স্বাস্থ্যনীতি অনুসরণ করছেন ঘরে-বাইরে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এখন করোনা পরীক্ষার কোনো সমস্যা নেই। যেখানে-সেখানে বিনামূল্যে পরীক্ষা করার পর প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ এবং পথ্য গ্রহণ করছেন।

তবে, এত কিছুর পর আক্রান্ত বেশি হওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বর্তমানের সংক্রমণে কতিপয় রাজনীতিকের আচরণকেও দায়ী করছেন। বিশেষ করে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাস্থ্যনীতির পরিপন্থী আচরণ এবং তার পার্টির সমর্থকদেরকেও সেভাবে চলার পরামর্শ দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, আরিজোনা, টেক্সাসসহ রিপাবলিকান অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে মহামারী আকার ধারণের পথ সুগম করেছেন।

পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে এপ্রিল-মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তদের শতকরা ৭ থেকে আট ভাগ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর এখন সে হার পাঁচ ভাগের কম।

জানা গেছে, এখন যুক্তরাষ্ট্রে  দৈনিক ৬ লাখ মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। আগে এটি ছিল সর্বোচ্চ এক লাখ। যদিও পরীক্ষার হার আরো বেশি হওয়া দরকার বলে চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা বলছেন। সংক্রমণ-বিশেষজ্ঞরা বলেন, এমন অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন যাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আলামত দৃশ্যমান হচ্ছে না। তাই পরীক্ষা করা হলে সেটি নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা করা যায় অথবা আইসোলেশনে গেলেও সংক্রমিত হবার আশঙ্কা কমে।  করোনা নিয়ে পর্যবেক্ষণরত সংস্থার ‘কভিড ট্র্যাসিং প্রজেক্ট’ কর্মকর্তা জানান, আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যাপারে ডাক্তার ও নার্সদের অভিজ্ঞতা বেড়েছে। জরুরি বিভাগে চাপ কমেছে। এপ্রিল-মে মাসে জরুরি বিভাগে ৬০ হাজারের বেশি রোগী যেতেন। এখন সে সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার ইনফেকশাস ডিজিজ বিশেষজ্ঞ ড. টাইসন বেল বলেন, চাপ কমে যাওয়ায় হাসপাতালগুলো গুরুতর অসুস্থদেরকেও চাপ মুক্তভাবে সেবা দিতে পারছেন।

সর্বশেষ খবর