শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

উগ্র জাতীয়তাবাদ বর্জনের ডাক

হিরোশিমা ট্র্যাজেডি

উগ্র জাতীয়তাবাদ বর্জনের ডাক

নানা রকম আলোয় হিরোশিমায় নিহতদের স্মরণ করা হয় -এএফপি

জাপানের হিরোশিমা শহরে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৫তম বার্ষিকী ছিল গতকাল। মানবসভ্যতার ইতিহাসে জঘন্যতম এ হামলার বার্ষিকীর দিনে জাপানে উগ্র জাতীয়তাবাদ বর্জনের ডাক দেওয়া হয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্র কিংবা করোনাভাইরাসের মতো মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী মানুষের সম্মিলিত লড়াইয়ের ওপর জোর দিয়েছেন হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবে।

দিবসটি উপলক্ষে হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তার মতে, এই উগ্র জাতীয়তাবাদই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাতসুই। বলেছেন, ‘এমন দুঃসহ অতীতের পুনরাবৃত্তি আমরা হতে দিতে পারি না।    সভ্য সমাজকে অবশ্যই আত্মকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ পরিত্যাগ করতে হবে এবং সব হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

মাতসুই আরও বলেছেন, হিরোশিমা আামদের  নাগরিক সমাজের কাছে বিশ্ব শান্তি অব্যাহত রাখা ও পারমাণবিক অস্ত্র বিলোপকে সম্ভব করে তোলার তাগিদ হাজির করে। আর প্রধানমন্ত্রী আবে তার বিবৃতিতে বলেন, প্রত্যেক দেশেরই উচিত পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংলাপের মধ্য দিয়ে নিজেদের   মধ্যকার অবিশ্বাস দূর করা। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি স্মরণ করছে জাপান। সেই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়াদের পাশাপাশি হামলায় নিহতদের আত্মীয়স্বজন ও বিদেশি প্রতিনিধিরা এসব আয়োজনে অংশগ্রহণ করছেন। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করার পাশাপাশি বিশ্বশান্তির ডাক দিয়েছেন তারা। তবে করোনার কারণে এবার হিরোশিমা দিবসে হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে জনসমাগমে অনুমতি দেওয়া হয়নি। দিবসের সব আয়োজন অনলাইনে সম্প্রচার করা হচ্ছে। আর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন তাদের সবাই ছিলেন মাস্ক পরিহিত।

সেই ১৯৪৫ সাল। জাপানের হিরোশিমা শহরে স্থানীয় সময় তখন সকাল ৮টা ১৫ মিনিট। আগেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান। মার্কিন বি-টুয়েন্টি নাইন  বোমারু বিমান এনোলা গে থেকে হিরোশিমায় ফেলা হয় আণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। বোমাটি প্রায় ৫০০ মিটার উঁচুতে বিস্ফোরিত হয়। হিরোশিমার ঘটনার তিন দিন পর ৯ আগস্ট নাগাসাকি শহরে ফ্যাটম্যান নামে আরকেটি পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করা হয়। তাতে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ নিহত হন। তবে জাপানের আসাহি শিমবুনের এক হিসাবে বলা হয়েছে, বোমার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগের কারণে দুই শহরে চার লাখের মতো মানুষ মারা যান। এদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক।

আণবিক বোমা হামলার এত বছর পরও শহর দুটোতে জন্ম নিচ্ছে বিকলাঙ্গ শিশু। ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য রোগে ভুগছে বহু মানুষ। দিবসটি পালনে জাপান সরকার ও বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। -জাপান টাইমস

সর্বশেষ খবর