শ্রীলঙ্কার জাতীয় নির্বাচনে ফের জয়জয়কার রাজাপক্ষে পরিবারের। বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়ে ফের ক্ষমতা দখল করল মাহিন্দা রাজাপক্ষের নেতৃত্বাধীন পডুজানা পেরামুনাকে শ্রীলঙ্কা পিপলস পার্টি। ফলে আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন একসময়ের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছোট ভাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছেন। পডুজানা পেরামুনাকে (এসএলপিপি) সরকার গঠনের জন্য আহ্বানও জানানো হয়েছে। শিগগিরই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মাহিন্দা।
গত নভেম্বরে কেয়ারটেকার সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন মাহিন্দা। যদিও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তার ছিল না। দেশের প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া সংবিধান মুলতবি করে মাহিন্দাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানান। ফলে দেশে এক সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের পর সেই সাংবিধানিক সংকট কাটল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি আসন জিতে সাংবিধানিক নিয়মে সরকার গঠন করতে চলেছেন মাহিন্দা।
এর ফলে শ্রীলঙ্কার শাসনক্ষমতা একটি পরিবারের হাতেই থেকে গেল। শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে ভোট গণনা শুরু হতেই বিরোধীদের পেছনে ফেলে অনেক এগিয়ে যায় এসএলপিপি। আর গণনা শেষ হতেই দেখা যায় দেশের মোট ২২৫টি আসনের মধ্যে ১৪৫টি এসেছে তাদের ঝুলিতে। আর তাদের জোট পেয়েছে আরও পাঁচটি আসন। এর ফলে মোট আসনের দুই-তৃতীয়াংশ দখলের মাধ্যমে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ফের প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসা নিশ্চিত হয়ে গেল মাহিন্দা রাজাপক্ষের। দেশের মোট এক কোটি ৬০ লাখ ভোটারের মধ্যে ৬৮ লাখের ভোট পেয়েছে রাজাপক্ষের দল। অর্থাৎ মোট ৫৯.৯ শতাংশ ভোট।এবারের নির্বাচনে মাহিন্দার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমসিংহে। কিন্তু ভোটে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়েছেন তিনি। তবে নতুন মুখ উঠে এসেছে রাজনীতিতে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রণসিংহে প্রেমাদাসার ছেলে এবারই নতুন দল তৈরি করে নির্বাচনে নেমেছিলেন। পার্লামেন্টে তার দলই প্রধান বিরোধীর সম্মান পাবে। রণসিংহে প্রেমাদাসাকে হত্যা করা হয়েছিল। বাবার কথা স্মরণ করেই নতুন দল তৈরি করেছিলেন তার ছেলে। করোনার কারণে দুইবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল শ্রীলঙ্কার নির্বাচন।