বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
জাতিসংঘের অভিযোগ

রোহিঙ্গা গণহত্যার আলামত দিচ্ছে না ফেসবুক

রোহিঙ্গা গণহত্যার আলামত দিচ্ছে না ফেসবুক

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনে মুসলিম রোহিঙ্গাদের হত্যা ও নির্যাতনের এন্তার অভিযোগ। এই অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতেও মামলা হয়েছে। আবার রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কর্তৃপক্ষের প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান অভিযোগ করেছেন, গণহত্যার বিষয়ে ফেসবুকের কাছ থেকে তদন্ত কাজে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ’ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগের পক্ষে আলামত সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তা পালন করছে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর দায়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) অভিযুক্ত হয়েছে মিয়ানমার। ভবিষ্যৎ প্রসিকিউশনে ব্যবহারের জন্য মিয়ানমারে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের আলামত সংগ্রহ করতে ২০১৮ সালে ইন্ডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম অন মিয়ানমার (আইআইএমএম) প্রতিষ্ঠা করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। মিয়ানমার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি, পুলিশ পোস্টে হামলাকারী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বৈধ অভিযান চালিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের অভিযোগ, ঘটনার সময় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে ফেসবুক অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। আর সেসব বিদ্বেষমূলক বক্তব্যই সহিংস পরিস্থিতিকে আরও জোরালো করে তুলেছে। কোম্পানিটি বলছে, তারা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য থামাতে কাজ করছে এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলো ডিলিট করে দিয়েছে। তবে ওইসব অ্যাকাউন্টের ডাটাগুলো সংরক্ষিত আছে বলেও জানিয়েছে ফেসবুক।

আইআইএমএম-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিকোলাস কুমজিয়ান। সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, ফেসবুকের কাছে মিয়ানমারে গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পক্ষে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সম্ভাবনাময় কিছু আলামত আছে। তবে বছরব্যাপী আলোচনার পরও তারা কোনো কিছুই শেয়ার করছে না। ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখন পর্যন্ত ফেসবুকের কাছ থেকে আমরা কোনো উপাত্ত হাতে পাইনি। তবে আমাদের আলোচনা চলছে এবং আশা করছি, শেষ পর্যন্ত আমরা গুরুত্বপূর্ণ এসব আলামত হাতে পেয়ে যাব।’ বলেন নিকোলাস। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারা রাখাইনে হত্যাকা-, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু করে। এ সময় জীবন বাঁচাতে নতুন করে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া।

সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার তথ্য গাম্বিয়াকে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফেসবুক। গণহত্যা চালানোর দিনগুলোতে মিয়ানমারের কর্মকর্তারা কবে, কীভাবে, কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, সে বিষয়ে ফেসবুকের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিল গাম্বিয়া।

সর্বশেষ খবর