শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

লেবাননে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান

♦ জরুরি অবস্থার অনুমোদন পার্লামেন্টে ♦ সেনাবাহিনীর ক্ষমতা বাড়ল

লেবাননে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান

বিক্ষোভ, বিশৃঙ্খলা দমন এবং আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীকে চরম ক্ষমতা দিয়ে জরুরি অবস্থার অনুমোদন দিয়েছে লেবাননের পার্লামেন্ট। গতকাল এক ভোটাভুটিতে জরুরি অবস্থার অনুমোদন দেয় দেশটির পার্লামেন্ট। পাশাপাশি রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে অবিলম্বে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার। গতকাল এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অধিবেশন। বৈরুতের বন্দর এলাকায় বিস্ফোরকের গুদামে গত ৪ আগস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনার পর জনরোষের মুখে সরকারের পতন হলেও বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়নি। সর্বশেষ খবর পর্যন্ত ওই বিস্ফোরক স্থলে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ছয় হাজারের অধিক। এ ছাড়া ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কয়েক হাজার বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা। বিস্ফোরণে অন্তত ৩ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে। বিস্ফোরণের পরদিনই দেশটির সদ্য পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের সরকার দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। এর আট দিনের মাথায় গতকাল ভোটাভুটিতে দেশটির পার্লামেন্ট তা অনুমোদন দিল। জরুরি অবস্থার মাধ্যমে দেশটির সেনাবাহিনী বেশ কিছু ক্ষেত্রের ক্ষমতা নিজেদের হাতে পেল। তা ব্যবহার করে সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের অবাধ বক্তব্য ও জমায়েত এবং গণমাধ্যমের স্বাধীন আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এ ছাড়া কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই তারা কারও বাড়িতে ঢুকতে পারবে এবং নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি এমন ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে পারবে। জরুরি অবস্থার সময়কালে দেশটিতে সব ধরনের মামলার কার্যক্রম সামরিক আদালতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়া বিঘিœত হবে জানিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আরও কয়েকটি মানবাধিবার গোষ্ঠী। এদিকে, বিস্ফোরণের এক সপ্তাহ পর লেবাননের বৈরুত বন্দরে আংশিকভাবে কার্যক্রম চালু হয়েছে।

 অন্যদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, পার্লামেন্টে স্পিকার নাবিহ বেরি, দ্রুত সরকার গঠনের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন এক রাজনীতিবিদ বলেছেন, ‘বিস্ফোরণের পর এমপিদের পদত্যাগ এবং আগাম নির্বাচন করা নিয়ে কথা উঠলেও স্পিকার নাবিহ বেরি একটি রাজনৈতিক বার্তাও দিতে চান যে, পার্লামেন্টের অস্তিত্ব আছে।’ রাজনীতিবিদরা নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। কিন্তু দেশটিতে রাজনৈতিক বিভক্তির প্রেক্ষাপটে এ এক জটিল প্রক্রিয়া।

ওদিকে, লেবাননে বিস্ফোরণের পর মানবিক সহায়তা আসতে থাকলেও বাইরের দেশগুলো পরিষ্কার করেই বলে দিয়েছে, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা দূর করতে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী সংস্কারের পদক্ষেপ না নেওয়া হলে লেবাননের ধসে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তহবিল দেওয়া হবে না। -আল জাজিরা

সর্বশেষ খবর