সাত দিনে একাধিকবার মুখোমুখি সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হলো ভারত এবং চীনা সৈন্যদের মধ্যে। প্রথম দিন সামান্য সংঘাত হলেও দ্বিতীয় দিন তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েনি বলেই খবর। আর এতে এক ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। চীনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না সে সম্পর্কে বেইজিং নিশ্চুপ। তবে লাদাখে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে আছে যে, যে কোনো সময় ফের সংঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্য দিকে, ভারত-চীন সীমান্তবর্তী প্রতিটি অঞ্চলে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে সিকিম সীমান্তে। সেখানে পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে ভারতীয় সেনাকে ব্যস্ত রেখে উত্তর-পূর্ব ভারতের চীন সীমান্তে বড়সড় আক্রমণ চালাতে পারে চীন। ২৯ আগস্ট রাত থেকে ৩০ আগস্ট ভোর পর্যন্ত প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে সংঘাত হয়েছিল ভারত এবং চীনের সেনার। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ৩১ আগস্টও একই ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বারে হাতাহাতি হয়নি। ৩১ আগস্ট ভারতীয় সেনাকে প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে ঘিরে ধরেছিল চীনের সেনা। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হলেও কমান্ডারদের নির্দেশে দুই পক্ষই সরে যায়।

ভারতের দাবি, চীন অন্যায্যভাবে দক্ষিণ প্যাংগংয়ে ভারতীয় এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করছে। কিন্তু দিল্লিতে চীনের দূতাবাস অত্যন্ত কড়া ভাষায় যে বিবৃতি জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনা চীনের এলাকা দখল করে বসে আছে; যা ভারত এবং চীনের সীমান্ত চুক্তির বিরোধী। অবিলম্বে ভারতীয় সেনাকে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবি করেছে চীন। নতুন সংঘাতের উৎস একটি পাহাড়কে কেন্দ্র করে। প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে একটি পাহাড়ের দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা। স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সেনা ওই পাহাড়ের দখল নেওয়ার পর থেকেই চীনের সেনা বারবার সেখান থেকে ভারতীয় সেনাকে সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু উচ্চতার সুযোগ নিচ্ছে ভারতীয় সেনা। এ নিয়েই আপাতত বিতর্ক চলছে। বস্তুত, ৩১ আগস্ট চীনের সেনা যখন ভারতীয় সেনাকে ঘিরে ফেলে, অদূরেই চুসুল সেক্টরে কমান্ডার স্তরের বৈঠক চলছিল দুই দেশের সেনার। তারই মধ্যে নতুন সংঘাতের খবর পৌঁছায়।

৩১ অগাস্ট ডোভালের বৈঠকের পরেই সিকিম, উত্তরাখন্ড এবং অরুণাচল সীমান্তে সেনা বাড়ানো হয়েছে। জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। শুধু তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের ওই সব অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে।

তবে অন্য সূত্র বলছে, লাদাখ সীমান্তেও আগের চেয়ে সেনার সংখ্যা অনেকটাই বাড়িয়েছে চীন। মাঝে সেনা কিছুটা পিছিয়ে নিলেও ২৯ আগস্টের ঘটনার পরে প্রকৃত সীমান্তরেখার খুব কাছে মর্টার, ট্যাঙ্ক নিয়ে এসেছে চীন। ভারতও সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে লাদাখে।