রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না

মস্কো বৈঠকের পরই হুঙ্কার চীনের

এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না

সীমান্ত নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও চীনের মধ্যে। সীমান্তে দুই দেশেই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এ অবস্থায় মস্কোয় বৈঠকে মিলিত হলেন চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেংহে ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলেছে দুজনের আলাপ-আলোচনা। বৈঠকের পর উভয় দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আলোচনা সফল হয়েছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই চীন ফের হুঙ্কার দিল, ‘এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না চীন’। এমনকি, লাদাখ সীমান্তে অশান্তির দায় ভারতের ঘাড়ে চাপাল বেইজিং। সাংহাই করপোরেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে অংশ নিতে মস্কোয় গেছেন রাজনাথ সিং। এই বৈঠকে অংশ নিয়েছে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়ে  ফেংহেও। সেখানেই তাদের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক চলে। শনিবার সকালে চীন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘ভারত ও চীন সীমান্তে উত্তেজনার কারণটা পরিষ্কার। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী ভারত।’ একই সঙ্গে ড্রাগনের হুঙ্কার, ‘চীন নিজেদের জমির এক ইঞ্চিও ছাড়বে না। চীনের সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তরক্ষা করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, সমর্থ ও তৈরি।’  তাদের তরফে আরও বলা হয়েছে, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে যা আলোচনা হয়েছিল তা বাস্তবায়িত করুক ভারত। আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হোক। দুই দেশেরই  নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটানো উচিত। দুই দেশের সম্পর্ক অবনতি হোক, এমন কোনো পদক্ষেপ কারোরই করা উচিত নয়। স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সীমান্তের সামগ্রিক অবস্থা উন্নত করতে উদ্যোগী হওয়া উচিত দুই দেশের।’ এদিকে ভারতের তরফে অবশ্য সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফেরানোর ওপর জোর দিয়েছে। ভারতের তরফে পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ অংশে ফের নতুন করে চীনা অনুপ্রবেশের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। আলোচনার মধ্য দিয়েই এই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার দাবিও তোলে ভারত। তবে চীন আলোচনার কথা মুখে বললে কাজে তা করছেন না, তা এ দিনের দোষারোপের ঘটনাতেই স্পষ্ট।

ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের : লাদাখ সীমান্তে ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠছে চীন। কোনো ছাড় না দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে রুখে দাঁড়িয়েছে ভারতও। ফলে দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে যুদ্ধের পরিস্থিতি। আর ভারত-চীন এ বিবাদের মধ্যে ফের গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো নিজের নাকটা গলিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার স্পষ্ট বার্তা, ভারত ও চীনের সীমান্ত পরিস্থিতি খুব খারাপ। এবং আমেরিকা দুই দেশের মধ্যে শান্তি ফেরানোর কাজে সাহায্য করতে পারলে খুব খুশি হবে। অর্থাৎ সোজা কথায় মধ্যস্থতার প্রস্তাব। এর আগেও একইভাবে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেবার ভারত এবং চীন দুই দেশই সেই প্র্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। নয়াদিল্লি এবং বেইজিং দুই দেশের তরফেই স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সীমান্ত ইস্যুতে তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপের কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাছোড়বান্দা। তিনি বলছেন, ‘ভারত এবং চীনের মধ্যেকার সীমান্ত পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। দুই দেশকে সম্মান জানিয়েই বলছি। আমরা ওদের সাহায্য করতে পারলে খুশি হব। দুই দেশের সঙ্গেই আমরা কথা বলছি। গোটা বিশ্বই চাইবে ওদের সাহায্য করতে।’ কিন্তু ভারত ও চীনের বিবাদ মেটানোর সুযোগ পেলে কার পক্ষ নেবেন? সে ইঙ্গিতও এদিন দিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য কি চীন দায়ী? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলছেন, ‘আমি আশা করব এমনটা নয়। তবে, চীন অবশ্যই মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।’

শুধু সীমান্ত পরিস্থিতি নয়, এদিন আরও একবার করোনাভাইরাস নিয়েও চীনকে তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘এই মুহূর্তে রাশিয়ার থেকেও চীন নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়া উচীত। কারণ ওরা যেটা করছে সেটা আরও খারাপ। ভাবুন তো চীনা ভাইরাসটা ছড়িয়ে ওরা কী করল! ১৮৮টা দেশের কী পরিস্থিতি করল। আমার এটা একেবারেই ভালো লাগেনি। আমেরিকা, ইউরোপ, গোটা বিশ্বকে ভুগতে হচ্ছে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর