শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনে সম্মত ভারত-চীন

পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আড়াই ঘণ্টা বৈঠক, ৫ দফা পরিকল্পনা

সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনে সম্মত ভারত-চীন

ভারতের সঙ্গে চীনের সংঘাত এখনো চরম অবস্থা ধারণ করেছে। বেশ কিছু জায়গায় চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে দুই দেশের বাহিনী। এরই মধ্যে বিদেশের মাটিতে মুখোমুখি হলেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাশিয়া সাংহাই কো-অপারেশন সামিটে উপস্থিত হয়েছেন একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা। আর সেখানেই রয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী  এস জয়শঙ্কর ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। মস্কোতে ভারত-চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক চলে। সেই বৈঠকে শান্তি ফেরাতে পাঁচ দফা পরিকল্পনার বিষয়ে একমত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ দুটি। যে সমঝোতায় মুখ্য ভূমিকা রাখল রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। মস্কোতে চলমান সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে বৃহস্পতিবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সম্মতিতে পৌঁছান। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যে এ বৈঠকের উদ্যোগ নেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

গতকাল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই মন্ত্রীর ‘খোলামেলা এবং গঠনমূলক’ আলোচনায় পাঁচটি পরিকল্পনায় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনে পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, সীমান্তের সম্মুখসারির সেনা ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সব চুক্তি ও প্রোটোকল মেনে চলা; শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং পরিস্থিতি উত্তেজক করে তুলতে পারে এমন সব কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন যে, সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি কোনো পক্ষের স্বার্থের অনুকূল নয়। সে কারণে উভয়পক্ষের সীমান্ত বাহিনীর উচিত তাদের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া, দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া, যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখা এবং উত্তেজনা নিরসন করা- এ ব্যাপারে দুই পক্ষই সম্মত হয়েছেন। ভারত-চীন সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে দুই দেশের শীর্ষ নেতার মধ্যে যেসব ধারাবাহিক সম্মতি তৈরি হয়েছিল তার থেকে নির্দেশনা নেওয়া উচিত বলেও দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন। এটি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের মধ্যকার বৈঠকের দিকেই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য বৈঠক যে মূলত সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কথা হবে তা শুরু হওয়ার আগেই জানিয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব।

বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, উভয় দেশই  সীমান্ত প্রশ্নে বিশেষ দূত মারফত আলোচনা ও যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েও একমত হয়েছে। গত মে মাস থেকে লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী। জুনে এক প্রাণঘাতী সংঘাতের পর সম্প্রতি দুই দেশই ৪৫ বছর পরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে। সীমান্তে ভারতের উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ ভূমি চীন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে। এনডিটিভি

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর