বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ইসরায়েলের সঙ্গে আরবদের চুক্তির মূলে মার্কিন অস্ত্র বাণিজ্য

আল জাজিরার প্রতিবেদন

ইসরায়েলের সঙ্গে আরবদের চুক্তির মূলে মার্কিন অস্ত্র বাণিজ্য

স্থানীয় সময় মঙ্গলবারই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঐতিহাসিক চুক্তি করতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে একত্রিত হয়েছেন উপসাগরীয় মুসলিম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। কিন্তু কেন হঠাৎ করে এই সম্পর্কোন্নয়নের চুক্তি। তা নিয়ে বিশ্লেষকদের নানান মতামত। তবে আল জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, এর মধ্য দিয়ে ওই দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কথা বলা হলেও এর নেপথ্যে রয়েছে অস্ত্র ব্যবসা। দেশগুলো যে চুক্তি করবে তার মূল ফ্যাক্টর হলো অস্ত্র কেনাবেচা। সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এই চুক্তিতে সম্মতি দেওয়ার পর মার্কিন সরকারের কর্মকর্তারা একে ‘আব্রাহাম একর্ড’ হিসেবে অভিহিত করছেন।

বিশেষজ্ঞরা আল জাজিরাকে বলেছেন, চুক্তিটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইসরায়েলের অর্থনৈতিক বয়কটকে সমাপ্ত করে দেবে। একই সঙ্গে আমিরাতের কাছে যুক্তরাষ্ট্র বিশাল পরিমাণ অস্ত্র বিক্রির দ্বার উন্মোচিত হবে। কিন্তু এখানে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থকে পুরো জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। যেটাকে বলা হচ্ছে ‘ বিশ্বাসঘাতকতা’।

এর আগে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের সঙ্গে মুসলিম ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র মিসরসহ দুটি দেশ শান্তি চুক্তি করে। দীর্ঘদিন পর সেই কাতারে শামিল হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। এই চুক্তি হলে আমিরাতের অর্থনৈতিক কর্মকা-কে আর বর্জন করবে না ইসরায়েল। ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন খুব সহজে আমিরাতসহ অন্য দেশগুলোতে বিপুল অস্ত্র বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু এই চুক্তির পুরো বিরোধী তুরস্ক ও ইরান। তারা বলছে, এই চুক্তির ফলে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা কখনোই পাওয়া সম্ভব হবে না। বরং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অস্ত্র ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে ওঠবে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির আর্মস অ্যান্ড সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক উইলিয়াম হার্টাং এ বিষয়ে আল জাজিরাকে বলেছেন, এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হলো অস্ত্র বিক্রি। দীর্ঘদিন ধরে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও বৃহৎ ড্রোন কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র   চুক্তি থাকায় আমিরাতে উন্নত ও দামি অস্ত্র বিক্রি    করতে পারছিল না যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে কৌশলী। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে একজন পুরনো ও ইতিবাচক ক্রেতা হিসেবে দেখতে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর বিশ্বে যত অস্ত্র বিক্রি হয়েছে তার প্রায় অর্ধেক একাই বিক্রি করেছে। যার অনেকটাই কিনেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। এই অস্ত্র বিক্রির মূল্য ৭০০ বিলিয়ন ডলার।

সর্বশেষ খবর