বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্বকে তোয়াক্কা না করে ইরানের ওপর একাই নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বকে তোয়াক্কা না করে ইরানের ওপর একাই নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

মাইক পম্পেও

ইরানকে ‘শায়েস্তা করতে’ ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক স্তরে যতই চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেই নীতি ততই বাধার মুখে পড়ছে। ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ত্যাগ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এখন সেই চুক্তিকেই সম্বল করে আবারও ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। অথচ এই নিষেধাজ্ঞায় সায় নেই জাতিসংঘের নিজেরই। এমন কী ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলোরও। কিন্তু তারপরও সোমবার কাউকে তোয়াক্কা না করে একাই ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে ওই বিশ্ব সংস্থার সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে ব্যর্থ হওয়ার পর এই পদক্ষেপ নিল ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টার জন্য অভিযুক্ত করে সোমবার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ঘোষণা করেন। মার্কিন এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এবারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

তবে ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এ সময় তিনি তেহরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টার অভিযোগ করেন। সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে পম্পেও যখন নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন তখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিফেন মানুচিন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার তার পাশে ছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যাশা, জাতিসংঘও যেন ইরানের ওপর অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিও যেন এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। তবে তার এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে ইউরোপীয় দেশগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছেন। পরমাণু চুক্তির যৌথ কমিশনের প্রধান হিসেবে তিনি এই চুক্তি অক্ষত রাখতে সর্বশক্তি প্রয়োগের অঙ্গীকার করেছেন।

অবশ্য পম্পেওর এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার এক দিন আগেই যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, একতরফাভাবে ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা চাপানোর অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। বরং চুক্তি ত্যাগ করায় তাদের যতটুকু আইনি ক্ষমতা ছিল সেটিও তারা হারিয়েছে।

গতকালও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, তারা পরমাণু চুক্তি অক্ষত রাখতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর মার্কিন প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত না পেলে জাতিসংঘ ইরানের ওপর আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বিরোধী। বিবিসি

সর্বশেষ খবর