শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ভূমধ্যসাগর নিয়ে আঙ্কারাকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি ইইউর

জ্বালানি সম্পদ এবং সমুদ্রসীমা নিয়ে গ্রিসের ওপর একের পর এক চাপ প্রয়োগ ও উসকানিমূলক আচরণের কারণে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন আঙ্কারাকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ‘একতরফা কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার’ আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল ভোরে ব্রাসেলসে ইইউ নেতাদের বৈঠককালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তুরস্ক ও গ্রিস এই অঞ্চলে সংঘর্ষের ঝুঁকি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি সামরিক হটলাইন স্থাপন করেছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে, তুরস্ক যখন ওই বিতর্কিত অঞ্চলে সম্ভাব্য তেল ও গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের লক্ষ্যে একটি জাহাজ পাঠায় তখনই উত্তেজনা ঘনীভূত হয়।

ইইউ কী বলেছে : ভন ডের লেইন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ইইউ ‘তুরস্কের সঙ্গে একটি ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্ক চায় এবং এটি আঙ্কারার স্বার্থেই কাজে আসবে।’ তবে এই সুসম্পর্ক তখনই প্রতিষ্ঠা সম্ভব যদি তুরস্ক উসকানি দেওয়া এবং চাপ প্রয়োগ বন্ধ করে, তিনি বলেন। তার মন্তব্য, আঙ্কারার এ জাতীয় কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের সব উপায় ব্যবহার করবে। আমাদের কাছে এমন কিছু উপায় আছে যা আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োগ করতে পারি। গভীর রাতে ওই বৈঠক শেষে ইইউ সদস্যরা ডিসেম্বরে তুরস্কের আচরণ পর্যালোচনা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং তারা ‘উসকানিমূলক আচরণ’ বন্ধ না করলে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে সম্মতি জানিয়েছে।

এ ঘটনার পেছনে কারণ কী : ইইউর সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই বেশ নাজুক। ইইউর সদস্য হওয়ার জন্য তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে এলেও বারবার তা স্থগিত করা হয়েছে। বিশেষত তুরস্কে ২০১৬ সালের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। এই টানাপড়েন সত্ত্বেও তুরস্ক ইইউর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে রয়ে গেছে। গ্রিসে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে ইইউ তুরস্কের সঙ্গে একটি চুক্তি করে। সেই চুক্তি অনুযায়ী তুরস্ক লাখ লাখ অভিবাসীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু চলতি বছরের আগস্টে গ্রিক দ্বীপ কাস্তেলরিজোর দক্ষিণে আঙ্কারা তাদের একটি রিসার্চ জাহাজ পাঠালে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রিস, তুরস্ক এবং সাইপ্রাস ওই দ্বীপটির মালিকানা দাবি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

সামরিক হটলাইন কেন : ব্রাসেলসের ন্যাটোর সদর দফতরে বৃহস্পতিবার তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে আলোচনার পর হটলাইনের এই ঘোষণাটি সামনে আসে। ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘দুই দেশ গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে আমি তাকে স্বাগত জানাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর