রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
হাথরসে তরুণী গণধর্ষণ ইস্যু

বিজেপি সবচেয়ে বড় প্যানডেমিক : মমতা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বিজেপি সবচেয়ে বড় প্যানডেমিক : মমতা

উত্তর প্রদেশের হাথরসে ১৯ বছর বয়সী এক দলিত তরুণীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে এবার পথে নামলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল বিকালে কলকাতার বিড়লা তালামন্ডল থেকে মেয়ো রোডে অবস্থিত গান্ধীমূর্তি পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস। এর নেতৃত্ব দেন মমতা। করোনার মতো অতিমারীকে উপেক্ষা করেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মিছিলে পা মেলান দলের একাধিক সাংসদ, বিধায়ক, নেতা-নেত্রী-কর্মী-সমর্থক।

মিছিল শেষে গান্ধীমূর্তির পাদদেশ থেকে সংক্ষিপ্ত ভাষণে হাথরসের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মমতা বলেন, ‘কোনো অপরাধ হলে মানুষ বিশ্বাস করে যে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে ও বিচার হবে। কিন্তু উত্তর প্রদেশে একটা মেয়ের ওপর অত্যাচার হলো। এরপর বাড়ির লোকদের আটকে রেখে, তাদের হাতে লাশ না দিয়ে রাতের অন্ধকার মোদি সরকার, বিশেষ করে যোগী সরকার লাশটাকে জ্বালিয়ে দিল। নীরবে দাফন করে দিল। এ জিনিস কত দিন চলবে? আজ শুধু উত্তর প্রদেশেই নয়, গোটা দেশেই এ জিনিস চলছে। দিল্লিতে দাঙ্গায় কত মানুষ মারা গেছে কেউ জানে না। আমি কিছু বললেই বলবে ও (মমতা) তো মুসলমানদের তোষামোদ করে। কিন্তু আমি বিজেপির লোকদের বলব, যখন মুসলমান বিপদে পড়ে তখন আমি তাদের পাশে দাঁড়াই। আবার দলিত, আদিবাসীরা বিপদে পড়লে আমরা সবাই মিলে পাশে দাঁড়াই। এটাই আমাদের মানবিকতা।’ চলতি বছরের মার্চে ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে গত ছয় মাসের মধ্যে এই প্রথম রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে দেখা গেল তৃণমূল নেত্রীকে। এর আগে মূলত ভার্চুয়াল মাধ্যমেই দল ও প্রশাসনিক বৈঠক সেরেছেন তিনি। কিন্তু হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে আগুন গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে ও বিজেপিকে চাপে রাখতে এদিন টর্চ ও কালো কাপড় হাতে নিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার পথ হাঁটলেন মমতা। পরে মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে তোপ দেগে বলেন ‘এক রাষ্ট্র, এক নেতা, এক রাজনৈতিক দল তৈরির প্রচেষ্টা চলছে। গোটা দেশে সুপার স্বৈরাচারতন্ত্র চলছে। একনায়কতন্ত্র চলছে। দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। কোনো রাজনৈতিক দল কথা বলতে পারে না, কোনো সরকারি কর্মকর্তা কথা বলতে পারে না। এজেন্সিরাজ চলছে। মানুষের জীবনের কোনো ভরসা, সুরক্ষা বা নিরাপত্তা- কোনোটাই নেই।’ মমতার অভিযোগ, ‘ভোট এলেই বিজেপি দলিতবন্ধু হয়ে যায়। দলিতদের বাড়ি গিয়ে তাদের সঙ্গে খাবে, ফটো তুলবে। আর ভোট শেষ হলেই দলিত, নমশূদ্রদের ওপর সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়। ভোট এলেই পাকিস্তান হয়, পুলওয়ামা বা অন্য কোনো যুদ্ধ হয়। আর ভোট শেষে রেল, বিএসএনএল, এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি হয়ে যায়।’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন ‘করোনাভাইরাস আমাদের কাছে অতিমারী ঠিকই কিন্তু সবচেয়ে বড় অতিমারী হলো বিজেপি দল। এরা সব শেষ করে দিয়েছে। এদের থামাতে গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী যা যা দরকার আমাদের করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর