বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

কিরগিজস্তানের রাজনীতিতে নাটকীয়তা

কিরগিজস্তানের রাজনীতিতে নাটকীয়তা

একের পর এক নাটকীয়তা কিরগিজস্তানের রাজনীতিতে। প্রথমে পার্লামেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি। তার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের দখল নিয়ে নিলেন। মুক্ত করলেন আটকে রাখা সাবেক প্রেসিডেন্ট আলমাজবেক আতামবায়েভ, সাদির জাপারোভসহ বেশ কিছু রাজনীতিককে। এরপরই পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী কুতাববেক বেরোনোভ। তার পদে বসানো হয়েছে সাদির জাপারোভকে। ওদিকে প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে রবিবারে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। সব মিলে দেশটিতে ভয়াবহ এক রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পরেই কিরগিজস্তানে শুরু হয়েছিল সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ। পুলিশের বাধা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্টের অফিস দখল করে নেয়, আগুন দেয় ভবনটির একাংশে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হলো। উত্তেজনা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে তারা। এর পরই প্রধানমন্ত্রী বেরোনোভ পদত্যাগ করেন। মঙ্গলবার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। সেখানেই কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাপারভকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০১৭-তে তাকে আটক করা হয়েছিল। গত ৪ অক্টোবরের ভোটে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার সমর্থকরা সোমবার তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসে। তিনিই কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভাই কাজ চালাবে। সাধারণ নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে কিরগিজস্তান। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, ভোটে জালিয়াতি করা হয়েছে। তাই তারা এই ফলাফল মানবেন না। কিরগিজস্তানে জনতার এই আন্দোলন নতুন নয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার পর বহুবার সাধারণ মানুষ এভাবেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ২০০৫ ও ২০১০ সালে দুজন প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভের জেরেই ক্ষমতা হারিয়েছেন। এবার তৃতীয় প্রেসিডেন্টও ক্ষমতা হারাতে পারেন। রবিবারের ‘জালিয়াতির’ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট সুরোনবাই জিনবেকভের সঙ্গে মিত্রতা আছে এমন দলগুলো বড় জয় পায়। নির্বাচনে ১৬টি দলের মধ্যে পার্লামেন্টে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে মাত্র চারটি দল। এর মধ্যে তিনটি দল প্রেসিডেন্টের একেবারে ঘনিষ্ঠ।

কিন্তু বিরোধীরা এ নির্বাচনকে জালিয়াতির আখ্যা দিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করে তোলেন। তবে এখনো ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট জিনবেকভ। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত আছেন। তিনি শক্তিশালী নেতাদের কাছে দায়িত্ব বুঝে দিতে চান। তবে তিনি কার কাছে এই ক্ষমতা দিতে চান সে বিষয়ে কিছু বলেননি। সাত বছর আগে বিরোধীদের বিক্ষোভ চলাকালে একজন আঞ্চলিক গভর্নরকে অপহরণের জন্য জাপারোভকে ১১ বছরের জেল দেওয়া হয়েছিল। একই রকম শাস্তি দেওয়া হয়েছিল আরও কিছু রাজনীতিককে। সাবেক প্রেসিডেন্ট আলমাজবেক আতামবায়েভকে দুর্নীতির দায়ে দেওয়া হয়েছিল ১১ বছরের জেল। বিক্ষোভকারীরা তাদের মুক্ত করে দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর