শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্যাংককে জরুরি অবস্থা জারি

থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ব্যাংককে জরুরি অবস্থা জারি

গতকাল সকালে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী -বিবিসি

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চলমান শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি থামানোর লক্ষ্যে থাই সরকার ব্যাংককে জরুরি অবস্থা জারির আদেশ দিয়েছে। বড় কোনো সমাবেশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এ আদেশে। টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়া এক ঘোষণায় পুলিশ জানিয়েছে, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। গতকাল সকালে পুলিশ অন্যতম প্রধান তিন নেতাসহ বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে। মূলত শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে পরিচালিত গণতন্ত্রপন্থি এ আন্দোলনকারীদের দাবি, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং রাজার ক্ষমতা কমিয়ে আনা। গতকাল স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে ব্যাংককে জরুরি অবস্থা কার্যকর হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে, তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেনি। বিবিসি জানতে পেরেছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তার মধ্যে বিক্ষোভের প্রধান নেতা- মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী অ্যানন নামপা, ‘পেঙ্গুইন’ নামে সুপরিচিত অ্যাকটিভিস্ট পারিত চিওয়ারাক ও পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানকুল রয়েছেন। আগস্টে থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনসমক্ষে প্রথমবার সমালোচনা করে প্রথাগত ধারার সংস্কারের দাবি তুলে আলোচনায় আসেন মি. অ্যানন। ওই মাসের শেষ দিকে রাজতন্ত্রের নিয়ম সংস্কারের ১০ দফা দাবি পেশ করে আলোচনায় আসেন পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানকুল।

নতুন আদেশে কী বলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার আদেশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। ওই ঘোষণায় বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা ‘বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতকে উসকে দেয়’ এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছিল এবং ‘রাজকীয় গাড়িবহরে’ বাধা দিয়েছিল। আদেশটি কার্যকরের কিছুক্ষণ পর দাঙ্গাপুলিশ প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বাইরে থাকা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। সে সময় কেউ কেউ প্রতিরোধ তৈরির চেষ্টা করলেও তাদের জোর করে পিছু হটিয়ে দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পরও রাস্তায় শত শত পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। আদেশে একসঙ্গে চারজনের বেশি জড় হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পাশাপাশি মিডিয়ার ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ‘আতঙ্ক উদ্রেককারী বা ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য বিকৃত করে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টির মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা অথবা শান্তি-শৃঙ্খলার ওপর প্রভাব ফেলে’ এ রকম কোনো খবর প্রচার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদেশে। এ ছাড়া এ আদেশ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ‘নিজেদের বাছাই করা’ যে কোনো এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে পারবে। কেন বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের : গণতন্ত্রের সমর্থনে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে চলতে থাকা আন্দোলন থাইল্যান্ডের ক্ষমতাসীনদের জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সাবেক সেনাপ্রধান ও ২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করা মি. প্রায়ুথের- যিনি গত বছর বিতর্কিত এক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, পদত্যাগ দাবি করছেন। থাইল্যান্ডের সংবিধান যেন নতুন করে লেখা হয়, সেটি বিক্ষোভকারীদের আরেক দাবি। সম্প্রতি করা সংবিধানের কয়েকটি সংশোধনী বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আগস্টে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর রাজতন্ত্রের সংস্কার দাবি জোরালো হতে থাকে।

সর্বশেষ খবর