শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা ফেরাতে ছয় দলের জোট

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা ফেরাতে ছয় দলের জোট

বৈঠকের পর গণমাধ্যম কর্মীদের মুখোমুখি কাশ্মীরের নেতারা

জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনার দাবিতে এবং এ অঞ্চলের মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে এক জোট হলো উপত্যকার ছয়টি বড় রাজনৈতিক দল। এগুলো হলো পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি), ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি), পিপলস কনফারেন্স (পিসি), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্কসিস্ট (সিপিআই-এম), পিপলস মুভমেন্ড (পিএম) এবং আওয়ামী ন্যাশনাল কনফারেন্স (এএনসি)। এই জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন’।

বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর সভাপতি ফারুক আবদুল্লার গুপকার রোডের বাড়িতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন এ ছয় দলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহসভাপতি ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, পিডিপি সভাপতি ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, পিসির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন, এএনসির সহসভাপতি মুজাফ্ফর শাহ, সিপিআইএম নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি, পিএম নেতা জাভেদ মীর প্রমুখ। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেসপ্রধান গুলাম মীর। প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে এ জোট গঠনের ঘোষণা দেন ফারুক আবদুল্লাহ। গণমাধ্যমের কর্মীদের সামনে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দলের নেতারা সর্বসম্মতভাবে জোটের নাম ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন’ রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জোট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর চেষ্টা করবে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট উপত্যকা থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সঙ্গে যেটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। ওই বিশেষ ধারা প্রত্যাহার করে ওই রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে (জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ) বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’ ফারুক আরও জানান, ‘জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ থেকে যে জিনিস ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল আমরা তা পুনরুদ্ধারের দাবিতেই সংগ্রাম চালাব। এটা আমাদের সাংবিধানিক লড়াই, আমরা চাই ভারত সরকার যেন এ রাজ্যের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়, যেটা ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত ছিল।’ ফারুক আবদুল্লাহর অভিমত কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের সময় এসে গেছে। আমরা মনে করি রাজ্যের রাজনৈতিক ইস্যুগুলোকে যত শিগগির সম্ভব মিটিয়ে ফেলা এবং এটা একমাত্র শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই করা সম্ভব। আর এ কাজে জম্মু-কাশ্মীরের সমস্যার সঙ্গে জর্জরিত প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ জরুরি।’ তবে উপত্যকায় ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনতে ঠিক কি ধরনের আন্দোলনে এ জোট শামিল হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। উল্লেখ্য. গত বছরের ৫ আগস্টের পর জম্মু-কাশ্মীরে এই প্রথম এতগুলো রাজনৈতিক দলের সমাহার হলো। কারণ গত বছরে রাজ্যটি থেকে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের ফলে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায় ফারুকসহ উপতক্যার একাধিক রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে চলতি বছরেই একে একে মুক্তি দেওয়া হয় জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাসহ বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদকে।

সর্বশেষ খবর